মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক: লোকসান বাড়লেও শেয়ার দরে উল্লম্ফন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: দিন দিন বাড়ছে কোম্পানির লোকসানের বোঝা। তবু মাঝেমধ্যে শেয়ারদরে উল্লম্ফন। কয়েকদিন ধরেই ‘মেঘনা কনডেন্সড মিল্কে’র শেয়ারদর বাড়ছে। লোকসানি কোম্পানির শেয়ারদর হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

তথ্যমতে, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক লিমিটেডের লোকসানের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে দেওয়া সর্বশেষ তথ্যানুসারে কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি টাকা। অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানির শেয়ারদর ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করছে। এরপরও প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদরে মাঝেমধ্যে উল্লম্ফন দেখা যায়। কিন্তু এটা বেশি দিন স্থায়ী হয় না। হঠাৎ তা নিম্নমূখী ধারায় ফিরে যায়। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারী, যারা এ কোম্পানির শেয়ার কেনেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। একদিকে তারা ক্যাপিটাল গেইন করতে পারছেন না, অন্যদিকে ডিভিডেন্ড গেইন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।

কোম্পানির লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত দুই বছরের মধ্যে কোম্পানির শেয়ারদর ফেসভ্যালু অতিক্রম করতে পারেনি। আলোচিত সময়ে কোম্পানির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৯ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত ওঠানামা করেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ সময়ই কোম্পানির শেয়ারদরে উল্লম্ফন দেখা গেছে। গত ২৪ নভেম্বর থেকে কোম্পানির শেয়ারদর পরপর কয়েকদিন বাড়তে দেখা গেছে। ওইদিন কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ৬ টাকা ৭০ পয়সা। গত ৬ ডিসেম্বর কোম্পানির শেয়ারদর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ৪০ পয়সা। তারপর তিন দিন কমলেও আবার শেয়ারদর বাড়ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে যখন বিভিন্ন ভালো কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে থাকে, তখন সুযোগ বুঝে লোকসানে থাকা প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদরও বাড়ে। এসব কোম্পানির শেয়ারদর হঠাৎ বাড়তে থাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ত্বরিত মুনাফা লাভের আশায় বিনিয়োগ করেন। এসব কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো কারণ না থাকলেও একটি চক্র জড়িত থাকে। যখন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করেন, তখন সুযোগ বুঝে অসৎ চক্র মুনাফা হাতিয়ে নেয়। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাই শেয়ারে বিনিয়োগ করার আগে সচেতন হওয়া উচিত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির এসব কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার কারণ খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছেন তারা।

এ সম্পর্কে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘আমরা সবসময়ই বিনিয়োগকারীদের সচেতনতার সঙ্গে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিই। কারও কথা, হুজুগে, গুজবে কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত নয়।’ একটি কোম্পানি সম্পর্কে ভালো করে জেনে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন তিনি।

মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের লভ্যাংশের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১১ সাল থেকে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ। অর্থাৎ ৬ বছর ধরে কোম্পানির লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত বিনিয়োগকারীরা।

কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৮০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১৬ কোটি টাকা। ডিএসইতে দেওয়া সর্বশেষ তথ্যানুসারে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে পরিচালকদের কাছে ৫০ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০