মেঘালয়ে কমেছে বৃষ্টি, সিলেটে বন্যার কিছুটা উন্নতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আরও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে অনেক পরিবার।

গতকাল শনিবার সকালে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, বন্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমেছে। গত শুক্রবার জেলায় বন্যা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ছয় লাখ ৪৩ হাজার ৪৭০। শনিবার সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৯ হাজার ৩৩ জনে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, ‘ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। জেলার সার্বিক পরিস্থিতির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারিভাবে শুকনো, রান্না করা খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

আগের তুলনায় কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভালোর দিকে যাচ্ছে জানিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সুরমা-কুশিয়ারা নদীর তিনটি পয়েন্ট ছাড়া জেলার অন্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের মেঘালয় রাজ্যেও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমেছে।

তিনি জানান, সুরমা নদী সিলেট শহর পয়েন্টে বিদৎসীমার সাত সেন্টিমিটার এবং কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন বলেন, ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৭ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে জকিগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা তাসলিম।

তিনি বলেন, ‘উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, আগের মতোই আছে। ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৩০ থেকে ১৫০ পরিবার রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষজনকে রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বন্যার্তদের প্রশাসনের খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।’

সিলেট জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯টি ওয়ার্ড, সিলেট সদর উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন, জৈন্তাপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন, গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন, কানাইঘাট উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন, জকিগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন, বিয়ানীবাজার উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলার দুটি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের ৯টি ওয়ার্ডসহ জেলার বন্যাকবলিত আটটি উপজেলার মোট ৬৮টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের ৭৮১টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় বন্যা আক্রান্ত জনসংখ্যা ছয় লাখ ৯ হাজার ৩৩ জন।

বন্যাদুর্গতদের জন্য পুরো জেলায় ৫৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে তিন হাজার ৩৪২ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। পানিবন্দি পরিবারগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরের কার্যক্রম এখনও অব্যাহত।

এছাড়া বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য ইউনিয়নভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

এদিকে উজান থেকে ভাটির দিকে পানি নামতে শুরু করায় সিলেট মহানগর, সদর, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের বার্তায় বলা হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০