আশিকুল ইসলাম, জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ প্রশাসক দিয়ে। দীর্ঘদিন এ দপ্তরগুলোর পরিচালকের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য এসে নতুন কাউকে নিয়োগ দেননি। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে নতুন পরিচালক নিয়োগের দাবি জানিয়ে এলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. নাসির উদ্দীনের নিযুক্তির মেয়াদ ২০২১ সালের ২২ জুন শেষ হয়। এরপর নতুন পরিচালক নিযুক্ত না করে আবার তাকে ২০২১ সালের ২৩ জুলাই আবার অনির্দিষ্টকালের জন্য অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক পদে নিযুক্ত করা হয়। তিনি পরবর্তী পরিচালক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। কাজী মো. নাসির উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারারের আস্থাভাজন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একই অবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তফা কামালের নিযুক্তির মেয়াদ ২০২১ সালের ২৪ জুলাই শেষ হয়েছে। এরপর তাকে আবার ২০২১ সালের ২৫ জুলাই পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের প্রশাসক হিসেবে ২০১৭ সালের ২০ জুলাই থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। ২০১৯ সালের ২০ জুলাই তার দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হলে নতুন কাউকে নিয়োগ না দিয়ে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট থেকে তাকে আবার পরিবহন প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়।
২০২১ সালের ১৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাসের দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হলে ১৫ মার্চ ওই পদে দপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলামকে পরিচালক পদে দায়িত্ব দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী দপ্তরপ্রধান হিসেবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও তার পরিবর্তে একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে দপ্তরের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি দপ্তরে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য আইটি দপ্তরের শুরু থেকেই পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। শুরু থেকে একটানা আইটি দপ্তরের দায়িত্ব দেয়া হলেও আবার ২০২০ সালের ২ মার্চ থেকে এ শিক্ষককে আইটি দপ্তরের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। যার মেয়াদ চলতি বছরের ৩ মার্চ শেষ হবে।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মনোবিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন বলেন, কোন রকমের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া উচিৎ নয়। মেয়াদ শেষ হলেই নতুন কাউকে পূর্ণ মেয়াদে নিয়োগ দিয়ে দিতে হবে। এর ফলে ভিতরে ভিতরে অনেকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। আবার অনেকে এসব অতিরিক্ত দায়িত্ব দেখে শিখতেছে পরে তারাও কোন দায়িত্বে গেলে অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়ার জন্য বসে থাকবে। তাই এগুলা এখনই বন্ধ করতে হবে।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, এ পদগুলোর দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ায় অতিরিক্ত দায়িত্বে দেয়া হয়েছে। যে কোনো সময় রদবদল হবে।