ক্রীড়া প্রতিবেদক : শিরোপা দেখে পাঠকের মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগতে পারে এ আবার কোন মেহেদি! সেটাই হয়তো স্বাভাবিক। কেননা, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) এবার মাঠ মাতাচ্ছেন তিনজন মেহেদি। তবে গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন ঢাকা প্লাটুনের মেহেদি হাসান। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে তার আগে এ স্পিনার বল হাতে দেখান ঝলক। যে কারণে মাশরাফি বিন মুর্তজার দলও জয়ের দেখা পেয়েছে।
ঘরোয়া ও বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের যারা খোঁজ-খবর রাখেন, তারা বেশ ভালোভাবেই মেহেদি হাসানকে চেনেন। তবে এতদিন অনেকেরই অজানা ছিল এ ডানহাতির ব্যাট চালানোর ধরনটা। গতকাল অবশ্য তিনি জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আবির্ভূত হন একজন অলরাউন্ডার হিসেবে। প্রথম বল হাতে কুমিল্লার রান নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখেন। পরে ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে ওয়ান ডাউনে নেমেই ঝড় তোলেন। শেষ পর্যন্ত তার ২৯ বলে ৫৯ রানে ভর করে কুমিল্লাকে সহজেই ৫ উইকেটে হারিয়ে দেয় ঢাকা।
গতকাল টস জিতে আগে বল হাতে কুমিল্লার ৩ উইকেট নিয়ে ১৬০ রানে আটকে দেয় ঢাকা। জবাবে শুরুতেই রাজধানীর দলটি হারায় এনামুল হক বিজয়কে। তবে ওয়ান ডাউনে নেমে শুরু থেকেই প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর ঝড় তুলে মাশরাফি বিন মুর্তজাদের জয়ের পথটা সহজ করে দেন মেহেদি। শেষ পর্যন্ত এ ডানহাতি হাফ সেঞ্চুরি-ঊর্ধ্ব ইনিংস খেলে ফিরে গেলেও এক বল আগেই জিতে যায় ঢাকা। তার আগে ৯ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন মেহেদি। অসাধারণ পারফরম্যান্সের সুবাদে এ তরুণই হয়েছেন ম্যাচসেরা।
মেহেদির ওপর শুরু থেকেই গতকাল বল হাতে আস্থা রেখেছিলেন মাশরাফি। এ তরুণ কিন্তু অধিনায়ককে মোটেও হতাশ করেননি। নতুন বলে সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমানকে ফিরিয়ে দেন। অন্য প্রান্তে অবশ্য কুমিল্লার ওপেনার রাজাপক্ষে ঝড় তুলছিলেন। কিন্তু ওই পরিস্থিতিতেও চার ওভারের স্পেলে মেহেদি মাত্র ৯ রান দেন।
আগের ম্যাচে ঝড় তোলা ডেভিড মালানও গতকাল তেমন কিছু করতে পারেননি। ১৭ বলে মাত্র ৯ রান তুলতে মেহেদীর বলে ক্যাচ হয়ে ফেরেন। তার বিদায়ে কুমিল্লার রান তোলার গতি কমে যায়। শেষ পর্যন্ত রাজাপক্ষের অপরাজিত ৬৫ বলে করা ৯৬ রানে ভর করে চ্যালেঞ্জিং রান গড়েছিল কুমিল্লা।
১৬১ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই এনামুল হক বিজয়কে হারায় ঢাকা প্লাটুন। পরে মেহেদি নামেন ২২ গজে। শুরু থেকেই এ ডানহাতি ঝড় তোলেন স্থানীয় অফস্পিনার রবিউল ইসলামের ওপর। তার এক ওভারেই তিনি নেন তিন ছয়ে ২৮ রান।
অন্য প্রান্তে তামিম ছিলেন থিতু হয়ে। তবুও মেহেদি ঝড়ে তা টেরই পাওয়া যায়নি। আল-আমিন হোসেনের বলে আউট হওয়ার আগে ২৯ বলে ৭ ছয়ে ৫৯ করেন মেহেদি। তার এই ইনিংসে ঢাকাকে এগিয়ে দেন অনেকটা পথ।
মেহেদি ফেরার পর দ্রুতই আসিফ আলী, জাকের আলী ও তামিম (৩৪) বিদায় নেন। যে কারণে জমে উঠেছিল ম্যাচ। তবে মুমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৬ বলে ২৬ রানে মিনি ঝড়ে সব শঙ্কা দূর করে ঢাকাকে জেতান শহিদ আফ্রিদি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৬০/৩ (রাজাপক্ষে ৯৬*, সৌম্য ১০, সাব্বির ০, মালান ৯, ইয়াসির ৩০* ; মাশরাফি ০/২১, মেহেদী ২/৯, হাসান ০.৩৪, ওয়াহাব ০/৩২, শাদাম ১/৩২, আফ্রিদি ০/২৩)।
ঢাকা প্লাটুন: ১৯.৫ ওভারে ১৬১/৫ (তামিম ৩৪, এনামুল ০, মেহেদী ৫৯, আসিফ ০, জাকের ০, মুমিনুল ২৮*, আফ্রিদি ২৬*; রবি ১/৪৪, মুজিব ২/২২, সুমন ০/৩৪, আল-আমিন ১/২৯, সৌম্য)।
ফল: ঢাকা প্লাটুন ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মেহেদী হাসান।
মন্তব্য