প্রতিনিধি, মেহেরপুর: রমজানের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে এক টাকা লাভে ইফতার পণ্য বিক্রি করছে মেহেরপুর সদর উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের কুতুবপুর সমাজকল্যাণ পরিষদ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠন। সংগঠনটি বাজার থেকে ন্যায্যমূল্যে কিনে আনা খাদ্যপণ্য মাত্র এক টাকা লাভে বিক্রি করছে। শুধু তা-ই নয়, পণ্য বিক্রির লভ্যাংশ দিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গরিব ও অসহায়দের মধ্যে বিনা মূল্যে ঈদ সামগ্রীও বিতরণ করবেন তারা। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরসহ সচেতন মহল। এক টাকা লাভের পণ্য পেয়ে খুশি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ। সংগঠনটি বলছে, প্রতি রমজান মাসেই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
গত মঙ্গলবার মেহেরপুর জেলার সুবিদপুর গ্রামে এই বাজার উদ্বোধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সজল আহম্মেদ ও মেহেরপুর জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক এবং পুলিশ কর্মকর্তা আসমত আলীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস দল।
অনুষ্ঠানে জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সজল আহম্মেদ বলেন, ‘এক টাকা লাভের বাজার’ এই মহৎ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমি মনে করি এমন উদ্যোগ দেশের সব যুবসমাজ যদি নেয়, তাহলে এসব পণ্য নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে। মেহেরপুর জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর পক্ষ থেকে সংগঠনটিকে বিনা মূল্যে শতাধিক প্যাকেট সেমাই অসহায় মানুষকে দেয়ার জন্য তুলে দেয়া হয়েছে।
এ সময় জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সুবিদপুরের যুবসমাজ এমন একটি মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করায় অনেক ভালো লেগেছে। এক টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করায় তারা এলাকায় যেমন প্রশংসিত হচ্ছেন, তেমনি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ পণ্য কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন।’
পণ্য কিনতে আসা আসমা বেগম বলেন, প্রথমত, আমরা হাতের নাগালেই পণ্য কিনতে পারছি। দামও কম। সেই সঙ্গে আমাদের কাছ থেকে পণ্য বিক্রির যে টাকা লাভ হবে, তা ওই সংগঠনের ছেলেরা না নিয়ে এলাকার গরিব ও অসহায় মানুষের মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিনা মূল্যে বিতরণ করবে। এটি অনেক ভালো উদ্যোগ।
কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বলেন, সুবিদপুর যুব সম্প্রদায় এক টাকা লাভে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে, এমনটি আমি জানতে পেরেছি। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
এ সময় সংগঠনের পরিচালক মো. রাহিদুজ্জামান বলেন, এক টাকা লাভের বাজার সকাল ৯টা থেকে বেলা ৪টা ও ইফতারের পর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আমরা ১১টা পণ্য বিক্রি করছি। এক মাস খাদ্যপণ্য বিক্রি করে যে টাকা লাভ হবে, তা আমরা না নিয়ে সব টাকার ঈদ সামগ্রী কিনে গরিব ও দুস্থদের মাঝে বিনা মূল্যে বিতরণ করব। আগামীতে আরও বড় পরিসরে করার চিন্তাভাবনা করছি আমরা।’
সংগঠনের সদস্য আদনান কাদির পিয়াল বলেন, এই সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে সমাজে এমন উন্নয়নমূলক কাজ করে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায়ই এবার মাহে রমজানকে সামনে রেখে এমন ব্যতিক্রম উদ্যেগ গ্রহণ করেছি, যাতে সব মানুষ তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যগুলো কিনতে পারে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের পরিচালক মো. রাহিদুজ্জামান ও সদস্য রাজিব আলী, সুরুজ আলী, আব্দুল্লাহ খান, পিয়াল, মকিবুর রহমান, হুচাইন মিয়া, গালিব খান, আরিফ খান, সাকলাইন খান, রুবেল, সুমন প্রমুখ।