Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 10:11 pm

মেহেরপুরে ভ্যান চালকের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল

প্রতিনিধি, মেহেরপুর মেহেরপুর সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামে আহম্মদ মালিথা (৬০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আহম্মদ মালিথা মৃত রঞ্জন মালিথার ছেলে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একই গ্রামের রামনগর কলোনি নিজ বাড়ির একটি কক্ষ থেকে গলায় রশি দেওয়া অবস্থায় পাড়ায় আহম্মদ মালিথার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। আহম্মদ মালিথা আত্মহত্যা করেছেন না তাকে হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে তার পরিবার ও এলাকাবাসীর মাঝে। তবে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার মেয়ে সাগরা খাতুন। অভিযোগ রয়েছে একই এলাকার কদভানু খাতুন নামের এক মহিলার সাথে সুদের টাকা লেনদেনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে হত্যা করে রশি দিয়ে টাঙিয়ে রাখা হয়েছে।

আহম্মদের মেয়ে সাগরা খাতুন বলেন, কদভানু একজন সুদ ব্যবসায়ী। আমার আব্বা তার কাছে যে টাকা নিয়েছিলো তা পরিশোধ করে দিয়েছে। তারপরও কদভানু গত পরশুদিন থানায় চার লক্ষ টাকার মামলা দিয়েছে। এবিষয়ে বাড়িতে পুলিশও এসেছিলো। বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের থানায় বসার কথা। পুলিশ যাওয়ার পর আমার আব্বা বাড়ির কাজকর্ম ও খাওয়াদাওয়া করলো। রাতেও আমার ছেলে বিদেশ থেকে ফোন করে আব্বা, মা ও আমাদের সবার সাথে কথাবার্তা বলে আমরা এক ঘরে আর আব্বা একা অন্য ঘরে ঘুমাতে যায়। পরে ভোরের দিকে মা দেখে আব্বা চৌকির উপর বসে আছে। পরে আব্বার গলায় দড়ি দেখে মা চিৎকার শুরু করলে আমরা উঠে দেখি আব্বার গলায় ফাঁস দেওয়া এবং নাক ও কান দিয়ে রক্ত বের হয়ে জামা ভিজে গেছে।

হত্যা বিষয়টি অস্বীকার করে কদভানু বলেন, আমি কোন সুদের ব্যবসা করি না। আমার পরিবারের উপার্জনের কোন লোক না থাকায় জমির উপর টাকা দিয়ে সংসার চালায়। প্রায় চার বছর আগে আহম্মদ আমার কাছ থেকে ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা নিয়েছে। ২ লক্ষ টাকার নেওয়ার লিখিত ষ্ট্যাম্প আমার কাছে আছে। যেখানে আমাকে বছরে দুইবার ধান দেওয়ার কথা। এছাড়া আমাকে ব্যবহার করে সে প্রায় আটটা এনজিওতে থেকে লোন করেছে। যে লোনের কারণে আমি গরু, ছাগল এমনকি গলার হারও বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। আমার নগদ টাকা ফেরত দেওয়া তো দূরের কথা তার লোনের কারণে আমি বাড়িতে থাকতে পারি না। টাকা আদায় করতে আমি চেয়ারম্যান-মেম্বার এমনকি সেনাবাহিনীর কাছেও অভিযোগ নিয়ে গিয়েছি, তারা আমাকে থানায় যেতে পরামর্শ দিয়েছেন।

আমি থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। বৃহস্পতিবার আমাদের বসার কথা। সে আজকে আত্মহত্যা করেছে। আহম্মদের বিভিন্ন জায়গায় ঋণের কারণে তার পরিবারে অশান্তি চলছিলো। তার ছেলে বিদেশ থেকে ছুটিতে দেশে এসে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেছে। তার ঋণের কারণে কয়েকদিন ধরে তাদের বাড়িতে অশান্তি চলছে। এই টাকার কারণে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি একজন মেয়ে হয়ে কিভাবে অন্য একটি বাড়িতে ঢুকে একটা মানুষকে হত্যা করে টাঙিয়ে রাখতে পারি। আমারও দাবি ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত হোক। যদি আমি দোষী হই আমি নিজেই ফাঁসির দড়ি গলায় পরবো।

এবিষয়ে সদর থানার ওসি সেখ কনি মিয়া বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরেই এটি হত্যা না আত্মহত্যা বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে হয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।