মেহেরপুরে মালটা চাষে পাঁচ চাষির সফলতা

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী (মেহেরপুর): সুস্বাদু আর রোগীদের জন্য বেশ উপকারী ফল মালটা চাষে সফলতা পেয়েছেন মেহেরপুরের আমঝুপির পাঁচ চাষি। এরই মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে মালটা চাষ। স্থানীয়ভাবে বাজার সৃষ্টি হওয়ায় তাদের দেখাদেখি অনেকেই মালটা চাষ শুরু করেছেন। মালটা চাষে আগ্রহী করে তুলতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে বলেও জানায় কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে সবুজ মালটা, বাতাসে দোল খাচ্ছে। সেই সঙ্গে দোল খাচ্ছে বাগান মালিকদের স্বপ্ন। মালটা পাহাড়ি ফল হিসেবে পরিচিত হলেও সমতল ভূমিতেও রয়েছে এ ফলের ব্যাপক সম্ভাবনা। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া মালটা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। অন্যান্য ফল চাষে কম-বেশি ঝুঁকি থাকলেও মালটা চাষে কোনো ঝুঁকি ও ঝামেলা না থাকায় বছর চারেক আগে মালটা চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেন আমঝুপি গ্রামের পাঁচ বন্ধু মাজেদুল হক, সুমন, লিটন, মোতালেব ও হাফিজুর। যুবক মাজেদুল হক জানান, তারা প্রথমে ১০ বিঘা জমিতে শুরু করেন মালটা বাগান। স্থানীয় বাজারসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে দেশে উৎপাদিত মালটার চাহিদা ও দাম পাওয়ায় পর আরও ২৩ বিঘা জমিতে বাগান করেন। প্রতি বিঘা মালটা বাগানে খরচ হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। গত বছর ২০ লাখ টাকার মালটা বিক্রি করেন তারা। জেলায় বর্তমানে মালটা বাগানের পরিধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯০ হেক্টর। এছাড়া এ বছর নতুন বাগান তৈরিতে জমি বাড়িয়েছেন অনেক চাষি। একই কথা জানিয়েছেন সুমন, লিটন, মোতালেব ও হাফিজুর। তিনি আরও জানান, কৃষি অফিস যদি চাষিদের খুব কাছাকাছি থেকে পরামর্শ দেয়, তাহলে অনেকেই এই লাভজনক মালটা বাগান করতে আগ্রহী হতো।

আমঝুপি গ্রামের কলেজছাত্র ইলিয়াস ও আলীম জানান, মালটা বাগানে কাজ করে অনেক শিক্ষিত বেকার ও শিক্ষার্থীরা তাদের পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছেন। ভবিষ্যতে তারাও মালটা বাগান করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা।

মালটার পাইকারি ব্যবসায়ী সুমন জানান, মালটার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের জমি থেকে মালটা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে চাষিরা ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে পাইকারদের কাছে মালটা বিক্রি করছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী ছাড়াও ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের ফল ব্যবসায়ীরা আসছেন মালটা কিনতে। স্থানীয়ভাবে বাজার সৃষ্টি হওয়ায় মালটা নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, মালটা চাষ লাভজনক হওয়ায় এরই মধ্যে আগ্রহী চাষিদের প্রশিক্ষণসহ নানা ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে। আগামীতে জেলায় মালটা বাগানের পরিধি আরও বাড়বে।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০