তুহিন ইসলাম, মেহেরপুর : ফল ও শাকসবজিতে বরাবরই মেহেরপুর জেলার সুনাম রয়েছে। এ জেলার ফল একদিকে যেমন দখতে ভালো, অপরদিকে খেতেও বেশ সুস্বাদু। চলতি মৌসুমে ব্যাপক মুকুল ধরেছিল লিচু গাছগুলোতে। লিচুও ধরেছে প্রচুর। তবে বৃষ্টি না থাকায় কিছু গুটি ঝরে যাচ্ছে গাছ থেকে। তারপরও প্রায় ৪শ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে মেহেরপুরে, যার বাজার দর প্রায় ৩০ কোটি টাকা, যা গত কয়েক বছরের রেকর্ড।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, স্থানীয় মোজাফফর জাতেরসহ চাইনা-৩, বোম্বাই, আঁটি ইত্যাদি জাতের লিচু মিলে জেলায় ৩শ হেক্টর জমিতে। প্রাকৃতিক কোনো ধরনের দুর্যোগ না হলে ৪শ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৩২ কোটি টাকা।
ভৌগোলিক ও আবহাওয়াজনিত কারণে মেহেরপুরের লিচু অন্য জেলার আগেই বাজারজাত করা যায়। দাম ভালো পাওয়ার কারণে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে লিচু চাষ।
জেলা শহরের নতুনপাড়ার লিচুচাষি হেকমত আলী জানান, তার ৫ বিঘা জমিতে লিচুর বাগান। লিচুগাছে ফুল আসার আগেই গত জানুয়ারি মাসে ৫ লাখ টাকায় লিচু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বাগান।
লিচু বাগান ক্রেতা মাবুদ আলী জানান, তিনি তিনটি লিচু বাগান কিনেছেন প্রায় ৫ লাখ টাকায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে অন্তত ৮ লাখ টাকার কেনাবেচা হবে। তিনি জানান, এ একটি মাত্র ফল এক মাস সময় যতœ করতে হয়।
লিচুর বড় শত্রু বাদুড় আর চামচিকা। লিচুতে রং ধরলেই এক রাতেই চামচিকাতে লিচু কেটে নষ্ট করে দেবে। এজন্য রাত জেগে বাদুড় চামচিকা প্রতিরোধ করতে হয়। অতিরিক্ত তাপদাহেও লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে যায়। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, মেহেরপুরে ৮০ ভাগ বাগানে আঁটি লিচু চাষ হয়।
এই লিচুর বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছেÑআঁটি মোজাফফর জাতির লিচু আগাম পাকে। সংখ্যায় বেশ ধরে। পোকার আক্রমণ কম হয়। ফলের ৭০ ভাগই রসালো। জেলায় ৩শ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ আছে। ৪শ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৩২ কোটি টাকা।