মোংলা বন্দরের উন্নয়নে ছয় হাজার কোটি টাকার চুক্তি সই

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোংলা বন্দরের উন্নয়নে ছয় হাজার ১৪ কোটি টাকা প্রকল্পের একটি চুক্তি সই হয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ইজিস ইন্ডিয়া কন্সালটিং ইঞ্জিনিয়ার্স প্রাইভেট লিমিডেটের মধ্যে ‘আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট প্রকল্পের’ চুক্তি সই অনুষ্ঠিত হয়।

গতকাল দুপুরে ঢাকার রেডিসন ব্লুতে ছিল এই আয়োজন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ও এজিস গ্রুপের নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লরেন্ট জারমেইন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা। এছাড়া প্রকল্প পরিচালকসহ মন্ত্রণালয় ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা জানান, প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল এক বছর। আর প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য মোংলা বন্দরের সক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়ানো। আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, কন্টেইনার হান্ডলিং ইয়ার্ড নির্মাণ, কন্টেইনার ডেলিভারি ইয়ার্ড নির্মাণ, সিকিউরিটি সিস্টেমসহ সংরক্ষিত এলাকা সম্প্রসারণ, সার্ভিস ভেসেল জেটি নির্মাণ, আটটি জলযান সংগ্রহ, বন্দর আবাসিক কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি  সুবিধা (১৩টি সুউচ্চ ভবন), বন্দর ভবনের সম্প্রসারণ, মেকানিকাল ওয়ার্কশপ, যন্ত্রপাতিসহ সিøপওয়ে ও মেরিন ওয়ার্কশপ কমপ্লেক্স নির্মাণ, দিগরাজে রেলক্রসিং ওভারপাস, মোংলা বন্দরের বিদ্যমান রাস্তা ছয় লেন পর্যন্ত সম্প্রসারণ ও বহুতল কার ইয়ার্ড নির্মাণ করা।

অনুষ্ঠানে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন হলে তা চট্টগ্রামের বিকল্প হয়ে উঠবে। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার কাছাকাছি চলে যাবে। এর মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে মোংলা বন্দর এগিয়ে যাবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে মোংলা বন্দর সচল করার পদক্ষেপ নেয়। ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে। ২০০৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৃতপ্রায় এ বন্দরটিকে কার্যকর করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছেন। বন্দরটি লোকসান কাটিয়ে লাভের ধারায় ফিরে এসেছে। 

মোংলা বন্দরের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পশুর নদীর আউটারবারে ড্রেজিং করার ফলে হারবাড়িয়া পর্যন্ত সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারে। ইনারবারে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে, যাতে বন্দর জেটিতে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারে। 

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্দরে বর্তমানে জাহাজ, কার্গো, কনটেইনার ও গাড়ি হ্যান্ডলিং গড়ে ১৭, ১৯, ৮ ও ১৩ শতাংশ বেড়েছে। মোংলা বন্দরের জন্য কৌশলগত মাস্টারপ্ল্যানে যথাক্রমে ২০২৫, ২০৪০ ও ২০৭০ সাল নাগাদ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন লক্ষ্য প্রস্তাব করেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০৪০ সালের শেষ নাগাদ মোংলা বন্দরে কার্গো, কনটেইনার ও গাড়ি হ্যান্ডলিং যথাক্রমে ২, ১৫ ও ৩ গুণ বাড়বে।

মোংলা বন্দরের এ মেগা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা, প্রকল্প সাহায্য ৪ হাজার ৪৫৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ২০২৪ সালের ৩০ জুলাই প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০