চট্টগ্রাম বন্দর

মোটর পার্টস ঘোষণায় বিষ আনল মাসুদ অটো পার্টস

সাইদ সবুজ, চট্টগ্রাম: দেশের বৃহৎ কাস্টম হাউসে প্রতিদিন বাড়ছে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির পরিমাণ। রাজস্ব ফাঁকি দিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে কোনো না কোনো নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করছে আমদানিকারকরা। কখনও কাপড় ঘোষণায় সিগারেট আবার কখনও চকোলেট ঘোষণায় মদ আনছে আমদানিকারকরা। এবার রাজধানীর রমনার নিউ ইস্কাটন রোডের নিউ মাসুদ অটো পার্টস নামের এক আমদানিকারক চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মোটর পার্টস ঘোষণায় আনলো বিষের চালান।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সূত্রে জানা যায়, নিউ মাসুদ অটো পার্টস চায়নার জিজেড ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশানাল কোম্পানি লিমিটেড থেকে ‘পার্টস অব ভেহিক্যাল লাইট/সিংগ্যালিং একস্কেট্রা ইকুইপমেন্ট অব ৮৫ দশমিক ১২ মোটর পার্টস’ আমদানির ঘোষণা দেয়। তারপর চলতি

বছরের ৭ জুলাই আমদানিকারকের পক্ষে তাদের মনোনিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের

আল ইসলাম চেম্বারের আমিন ট্রেড ইন্টারন্যাশানাল চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করে। এ চালানে চার হাজার ১১৯ ডলারের মোটর পার্টস আমদানির ঘোষণা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে ওই চালানে আমদানিকারক নিয়ে এসেছে কীটনাশক তৈরিতে ব্যবহƒত বিষ; যা কাস্টম হাউসের রাসায়নিক পরীক্ষায় বেরিয়ে আসে।

রাসায়নিক পরীক্ষাগারের রিপোর্টে দেখা যায়, নমুনার ফলাফলে উল্লেখ রয়েছে ডি-অ্যালথ্রিন, টেকনিক্যাল গ্রেড এবং কেমিক্যালর নাম উল্লেখ করা হয়েছে- (জঝ)-৩-ধষষুষ-২-৪-ড়ীড়পুপষড়ঢ়বহ-২-বহুষ (১জ)-পরং, ঃৎধহংপযৎুংধহঃযবসধঃব, যা মশার কয়েল ও কৃষিতে ব্যবহƒত কীটনাশক তৈরিতে ব্যবহার হয় বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক মো. আবদুল হান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি শেয়ার বিজকে জানান, বিষ আমদানি অবৈধ নয়। তবে বিষ আমদানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দপ্তর থেকে অনুমতি পেলে শর্ত সাপেক্ষে আমদানির বিধান রয়েছে। কিন্তু এ চালানে বিষ আমদানির বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া মোটর পার্টসের তুলনায় আমদানিকৃত পণ্যে আর্থিক মূল্যও অনেক বেশি।

এদিকে আমদানিকারকের ঘোষণা অনুযায়ী এক হাজার ৬৫০ কেজি মোটর পার্টস আমদানির কথা থাকলেও চালানটি এখন অবধি কায়িক পরীক্ষা না হওয়ায় কি পরিমাণ পণ্য রয়েছে তা জানাতে পারেনি কাস্টম কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমরা সব সময় রাজস্ব ফাঁকির চালান ধরতে তৎপর। এআইআর শাখা শুধু নভেম্বরেই সন্দেহযুক্ত ১১১টি চালান আটক করে।  এর আগে গত ১৭ মাসে সাড়ে তিন হাজারের অধিক চালান আটক করে দেড় হাজারের বেশি অনিয়ম উদ্ঘাটন করেছে। তাতে দেড় শত কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ফাঁকি রোধ হয়েছে।’

কাস্টম কর্মকর্তারা জানান, আমদানির ক্ষেত্রে মিথ্যা ঘোষণা কমন বিষয়। প্রায় প্রতিদিনই মিথ্যা ঘোষণার পণ্য আটক হচ্ছে। এসব অনিয়মে চালান খালাস নিতে অনেক সময় আমদানিকার ও সিঅ্যান্ডএফ মিলে সিন্ডিকেট করে নানা অপকৌশল অবলম্বন করে। তবে কিছু চালানে তারা সফল হলে বেশিরভাগ সময়ই আমাদের নজরদারি ও পাতা ফাঁদে পড়ে আটক হয়। চলতি অর্থ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে এমন সন্দেহযুক্ত ৯৪০টি চালান আটক হয়েছে। তার মধ্যে ৭৫০টি চালান শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হলে ৩৭৯টিতে অনিয়ম পায় কাস্টম কর্তৃপক্ষ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০