মোহাম্মদ আবু নোমান: চামড়া অতি মোটা হওয়ায় গণ্ডারের গায়ে চিমটি কাটলে নাকি তিন দিন পর খবর হয়! এ কাহিনি কৌতুকে শুনেছিলাম। চলমান করোনা মহামারিকালে বিশ্বব্যাপী বেশিরভাগ সেক্টরে অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক হলেও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) কোম্পানিগুলো ব্যাপক লাভ করে, তা জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে যেভাবেই হোক। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা একটি কার্যকর ও অতি প্রয়োজনীয় পদ্ধতি। বর্তমানে প্রতি এক হাজার টাকার ক্যাশ আউট চার্জ ১৮ দশমিক ৫০ টাকা, যদিও এজেন্টরা গ্রাহকের কাছ থেকে চার্জ হিসেবে ২০ টাকা নেন। অথচ তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে শুধু এসএমএস চালাচালির লেনদেনে প্রতিহাজারে ১৮+ টাকা কেটে নেওয়া কতটুকু যৌক্তিক? জোর-জুলুমের একটা সীমা থাকা উচিত। যা-ই হোক, গণ্ডারের চিমটি খাওয়ার কৌতুকের মতোই সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংক এসেছে গ্রাহকদের উদ্ধার করতে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক এক নির্দেশনায় মোবাইল আর্থিক সেবায় (এমএফএস) ভ্যাটসহ কী পরিমাণ টাকা কাটা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট করে গ্রাহকদের জানাতে নির্দেশনা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সার্ভিস চার্জ/মাশুল হার-সংক্রান্ত বিভ্রান্তি পরিহারকল্পে বিভিন্ন গণমাধ্যম (সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন প্রভৃতি) এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক, টুইটার ইনস্টাগ্রাম প্রভৃতি) প্রচার-প্রচারণাসহ সব ক্ষেত্রে ভ্যাটসহ সার্ভিস চার্জ/মাশুল হার উল্লেখ করতে হবে।
ক্যাশ আউট চার্জ কমানোর পরামর্শ: ক্যাশ আউট খরচ কমিয়ে এক অঙ্কে নামিয়ে আনতে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারীদের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। লেনদেনের উচ্চ চার্জ গ্রামাঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি ক্ষুদ্র্র এবং ছোট উদ্যোক্তাদের সেবা থেকে দূরে রেখেছে। রাজকীয় বিশেষজ্ঞদের তাহলে এত দিনে কানে পানি ঢুকেছে। মোবাইলের ক্যাশ আউটের উচ্চরেটের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মধ্যবিত্ত, নতুন উদ্যোক্তা ও গরিব মানুষ। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একজন উচ্চশিক্ষিত ইলেকট্রনিক্স পণ্যের উদ্যোক্তা লেখককে বলেন, ‘আমার পণ্যের পরিচিতি ও বাজারজাত করার জন্য আমি রাত-দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি। মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা ইনকাম হলেই আমি খুশি। যোগাযোগ ও বিল কালেকশনের জন্য দৈনিক শতাধিক লোকের সঙ্গে কথা বলতে আমার মাসে দুই হাজার টাকার ওপরে খরচের সঙ্গে ক্যাশ আউটের উচ্চরেট গলার কাঁটা হয়ে আছে। এমনিভাবে ভার্সিটি থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে গার্মেন্ট এক্সেসরিজ ও কয়েকজন পোশাকের মার্কেটিংয়ে কর্মরতরা বলেন, ‘এমনিতেই বিভিন্ন খরচে দিশাহারা, তারপর নিজের খাওয়া-পরা এবং বাবা-মা ও ভাই-বোনদের ন্যূনতম চাহিদা মিটিয়ে এখনও বিয়ে করার কথা চিন্তা করতে পারিনি। আমাদের এ সার্ভিসের সবচেয়ে প্রধান মাধ্যম হলো মোবাইল।’ ওপরের ভুক্তভোগীদের কথা প্রমাণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান। বর্তমানে বিকাশ, রকেট, নগদ, ইউক্যাশ, এমক্যাশ, শিওরক্যাশসহ দেশে ১৬টি প্রতিষ্ঠান এমএফএস কার্যক্রম চালাচ্ছে। গত আগস্ট শেষে এমএফএসের প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ২৯ লাখে। শুধু আগস্টে লেনদেন হয়েছে ৪১ হাজার কোটি টাকা।
ব্যাংকিংয়ের নামে লুটপাট ও ডাকাতি: সচতেন সবারই মনে থাকার কথা, দেশে যখন প্রথম মোবাইল কোম্পানি আসে, তখন প্রতি মিনিট কথা বলার বিল ছিল প্রায় ১০ টাকা। এক মিনিট পর এক সেকেন্ড হলেও পুরো মিনিটের টাকা দিতে হতো। এছাড়া দোকানের মাধ্যমে ঢাকার বাইরে কথা বলতে গেলে দিতে হতো ১৫ টাকা করে চার্জ। দেশটা যেন ছিল মগের মুল্লুক! তখন তারা কিন্তু লাভ করেছে। অথচ এখন কথা বলার চার্জ পয়সায় নেমে এলো কীভাবে? শুরুর দিকে টাকা পাঠাতে হাজারে ১২ টাকা পরে ১৫ টাকা কমিশন পেতেন বিকাশ এজেন্ট। আর এখনকার কমিশন হার হাজারে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থবিশ্লেষকরা মনে করেন, এই চার্জ অনেক বেশি। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন তো দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে লুটপাট ও ডাকাতি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন। বাঙালিদের পকেট যেভাবে খুশি, তেমন করেই কাটা যায়! চাল-ডাল দিয়ে, আদা-পেঁয়াজ দিয়ে, গ্যাস-বিদ্যুৎ দিয়ে, ওষুধ-ডাক্তার দিয়ে, মোবাইল দিয়ে, ‘যেমনে খুশি তেমনে’ জনগণকে বলির পাঁঠা বানানো হয়। অথচ প্রশাসনের সেবা বিভাগগুলোয় সেবার মান উন্নত হচ্ছে না, বরং অবনতির অভিযোগ পাহাড়সম। এটা যেন জনগণকে নিয়ে মজা করা, তামাশা করা! প্রশাসন ও ক্ষমতাবানদের গাড়ি-বাড়ি, আরাম-আয়েশ, বেতন-বোনাস, পে-স্কেল, উৎসব ভাতাÑসবকিছুর সঙ্গে দুর্নীতিও চলবে ষোলো আনায়! দেশের বেকার, মধ্যবিত্ত কি নি¤œবিত্তরা কীভাবে চলছে, চলবেÑতার খবর কে রাখে?
ওরা স্বেচ্ছায় ক্যাশ আউট চার্জ কমাবে না: বিশেষজ্ঞরা সরকারের চলমান ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রচারণা বাস্তবায়নের জন্য মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস চার্জের একটি সীমা নির্ধারণ করে দেওয়ার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো স্বেচ্ছায় ক্যাশ আউট চার্জ কমাবে না। ক্যাশ আউট চার্জ কমানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের বিকল্প নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারীরা নিজেদের ইচ্ছামতো ব্যবসা করছেন।’ অপরদিকে ইক্যাবের পরিচালক আশীষ চক্রবর্তী বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস প্রদানকারী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে বাংলাদেশে ক্যাশ আউট চার্জ অনেক বেশি। দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ডিজিটাইলেশন প্রক্রিয়া ছড়িয়ে দিতে ক্যাশ আউট চার্জ এক অঙ্কে নামিয়ে আনতে হবে।’
সেবার চার্জ আগেই জানাতে হবে গ্রাহককে: মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিভিন্ন সেবার মাশুল বা চার্জ সম্পর্কে গ্রাহকদের যথাযথভাবে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনায় মোবাইলের মাধ্যমে টাকা পাঠানো ও সংগ্রহের মাশুল হার পরিবর্তন করলে গ্রাহকের কাছে অগ্রিম নোটিস পাঠানোর কথা বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট থেকে এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এতে যেকোনো পরিষেবা দেওয়ার আগে তার ধরন, প্রযোজ্য সার্ভিস চার্জের পরিমাণ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জের তালিকা সম্পর্কে গ্রাহকদের যথাযথভাবে অবহিত করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে কার্যরত সব মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রোভাইডারের কাছে পাঠানো ওই সার্কুলারে বলা হয়, যেকোনো পরিষেবা প্রদানের আগে পরিষেবার ধরন, পরিষেবার জন্য প্রযোজ্য সার্ভিস চার্জ/মাশুলের পরিমাণ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জের তালিকা প্রস্তুত করে সে সম্পর্কে গ্রাহকদের যথাযথভাবে অবহিত করার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি নিজস্ব ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশনে প্রদর্শন করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
কভিডকালে মোবাইলই যখন মূল চালিকা: বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশ-বিদেশে বর্তমানে যোগাযোগ ও আর্থিক লেনদেনে মোবাইল হয়ে উঠেছে মূল চালিকা। এছাড়া দেশ যখন ডিজিটাল ইকোনমির দিকে এগিয়ে চলছে, ঠিক সে সময়ে মোবাইলে কথা বলা ও ক্যাশ আউটের উচ্চ রেটের বোঝা কোনোভাবেই দেশের অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক হবে বলে আমরা মনে করি না। এ বোঝা দরিদ্র মানুষের জন্য অসহনীয় হওয়া ছাড়াও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে অন্তরায় হয়ে উঠবে। বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি সুবিধাভোগীরা কোটি কোটি টাকার মালিক। তাদের ফোন ফ্রি, কল ফ্রি, বাসা ফ্রি ও যাতায়াত ফ্রি। আসলে জনসাধারণকে বোঝার এবং তাদের কথা ভাবার মতো কেউ আছে কি? নাকি যা মন চায়, তা-ই করে ফেললাম? মোবাইল কোম্পানিগুলো কিছু কুটিল অফার দিয়ে থাকে, যেমনÑ৫৯ টাকায় চার জিবি নেট সময় তিন ঘণ্টা। অর্থাৎ কাউকে এক কেজি মুড়ি খেতে দেওয়া হবে, কিন্তু সময় নিতে পারবে ২০ সেকেন্ড! জনগণকে পরোয়া না করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো রাজত্ব করার সুযোগ নিয়েছে তারা। সাধারণ জনগণ তো কলুর বদল, সব নীরবে সহ্য করে যাবে। এসব দেখার যেন কেউ নেই।
দেশ ডিজিটাল করার সেøাগান: কথায় কথায় এমপি ও মিনিস্টাররা দেশ ডিজিটাল করার সেøাগান দেন। মানুষ যদি স্বল্প ব্যয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার করতে না পারে, তাহলে দেশ ডিজিটাল হবে কীভাবে এটা কি তারা অনুধাবন করে থাকেন? ১৯৮৯ সালে মোবাইলের যাত্রার শুরু থেকেই কলরেট কমানোয় অতীতের কোনো সরকারেরই ভূমিকা রাখেনি। অপারেটররা পরস্পর বিজনেস প্রতিযোগিতায় কমিয়েছে। প্যাসিফিক বাংলাদেশ লিমিটেড একচেটিয়াভাবে সেট, সংযোগ ও কথা বলার গলাকাটা রেটের মাধ্যমে এর সূচনা করে। বর্তমানে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তের সীমানা ছাড়িয়ে নিম্নবিত্ত ক্ষেতমজুর, গৃহকর্মী, ফকির ও মিসকিনের হাতেও রয়েছে মোবাইল ফোন। সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ধরে রাখতে হলে এর সেবার ব্যয় রাখতে হবে যৌক্তিক পর্যায়ে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জনবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বুঝতে হবে, কতটুকু সেবার জন্য কত বেশি ব্যয় করতে হবে। এ হিসাব খুব কঠিন নয়।
সব ব্যাংক থেকে মোবাইলে যাবে টাকা: মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭ অক্টোবর থেকে থেকে আন্তঃলেনদেন সুবিধা চালু হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাংক ও এমএফএসের মধ্যেও আন্তঃলেনদেন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। এ দুটি সেবা চালু হলে গ্রাহকেরা সহজেই ব্যাংক থেকে এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে এবং এমএফএস প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাংকে টাকা স্থানান্তর করতে পারবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২২ অক্টোবর এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। নির্দেশনায় আগামী মার্চের মধ্যে সব ব্যাংক ও এমএফএস প্রতিষ্ঠানকে আন্তঃলেনদেন চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়। অর্থাৎ কোনো গ্রাহক চাইলে তার বিকাশ হিসাব থেকে সহজেই এমক্যাশে টাকা পাঠাতে পারবেন। বর্তমানে একটি এমএফএস থেকে অন্য এমএফএসে টাকা স্থানান্তরের কোনো সুযোগ নেই। এমএফএসের নিজেদের মধ্যে লেনদেনের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, আল-আরাফাহ্? ইসলামী ও পূবালী ব্যাংক থেকে এমএফএস প্রতিষ্ঠানে টাকা লেনদেন করা যাবে। অর্থাৎ এ চার ব্যাংকের কোনো গ্রাহক চাইলে তাদের ব্যাংক হিসাব থেকে আপাতত বিকাশসহ চারটি এমএফএস প্রতিষ্ঠানের হিসাবে টাকা পাঠাতে পারবেন।
বিটিআরসির অনুসন্ধানে ভয়াবহ চিত্র: নিউজ অ্যালার্ট, ওয়েলকাম টিউনসহ নানা ধরনের সেবার নামে গ্রাহকদের অজান্তেই মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস চালু করে কোটি কোটি টাকা কেটে নিচ্ছে একশ্রেণির ভ্যাস প্রোভাইডার। শতাধিক ভ্যাস প্রোভাইডারের মধ্যে পার্পল ডিজিট কমিউনিশেন ও অভিকথাচিত্রের গত ছয় মাসের কার্যক্রম অনুসন্ধান করে বিটিআরসি গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার ভয়াবহ চিত্র দেখতে পায়। দেখা গেছে, গত আগস্টে অভিকথাচিত্র তিন লাখ ৫৮ হাজার ৭২২ গ্রাহকের ফোনে ‘ডেইলি নিউজউড২৪’-এর নিউজ অ্যালার্ট ও ‘ঝালমুড়ি ওয়েব পোর্টাল’ সার্ভিস চালু করেছে। এই গ্রাহকদের মধ্যে দৈবচয়নের ভিত্তিতে বিটিআরসি ৯০ গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের মধ্যে একজনও বলেননি, তাদের সম্মতি নিয়ে এই সার্ভিসটি চালু করা হয়েছে। আমরা যতটুকু বুঝি, মোবাইল কোম্পানিগুলো চাইলে এভাবে গ্রাহকের অজান্তে টাকা কেটে নিতে পারত না। তারা কোনোভাবে দায় এড়াতে পারে না। বরং তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এই টাকা কেটে নেওয়াকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। তাদের কঠোরভাবে সতর্ক করে প্রশাসনিক জরিমানা করা জরুরি বলে আমরা মনে করি।
দুর্বল শাসনব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন মহল সরকারের কাছ থেকে নানা ধরনের সুযোগ নেয়। তাদের খুঁটির জোর বড় শক্ত! ভোগান্তি আর প্রতারণার অভিযোগে জর্জরিত মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসগুলো। যাই হোক, ক্যাশ আউট চার্জ কমানোর এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। এতে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে। ক্যাশ আউট চার্জ কমানোয় কার্যরত সব এমএফএস প্রোভাইডার ও সরকারের দায়িত্বশীলদের সম্মিলিতভাবে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে আমরা মনে করি।
ফ্রিল্যান্স লেখক
abunoman1972@gmail.com