Print Date & Time : 1 July 2025 Tuesday 3:25 am

মোসাদ্দেক-রুবেলের পর মুশফিক-লিটনের ঝলক

ক্রীড়া ডেস্ক: অলরাউন্ডার হিসেবে বেশ পরিচিত মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। গত পরশু ওয়ানডে সিরিজের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে জ্বলে ওঠেন তিনি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন রুবেল হোসেন। পরে মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস দেখান ব্যাটিং-ঝলক। তাতে ইউনিভার্সিটিজ অব ওয়েস্ট ইন্ডিজ (ইউডব্লিউআই) চ্যান্সেলরস একাদশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ের সুখস্মৃতি নিয়েই আগামীকাল গায়ানায় প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামবেন মাশরাফি বিন মুর্তজারা।
জ্যামাইকায় গত পরশু ১০ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে মোসাদ্দেক নেন ৪ উইকেট। তার তোপেই তো এক সময় স্বাগতিকরা ৮৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল। তারপরও ইউডব্লিউআই করে ২২৭ রান। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের শুরুটাও ভালো ছিল না। মিডল অর্ডারেও দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়েছিল সাকিব আল হাসান-মাশরাফি বিন মুর্তজাহীন টাইগাররা। তারপরও লিটন কুমার দাস ও মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ভর করে বাংলাদেশ লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ৩৯ বল বাকি রেখে।
মাশরাফির জায়গায় প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টস জিতে গত পরশু এ ডানহাতি বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। সেটা যে ঠিক ছিল, তা প্রমাণ করেছেন মোসাদ্দেক-রুবেল হোসেনরা। ইউডব্লিউআই অধিনায়ক চাডউইক ওয়ালটন ফিরে যান শূন্য রানেই। গেইল সেভাবে ঝড় তুলতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় উইকেটে জুটি গড়ে তোলেন আমির জাঙ্গুর সঙ্গে। জুটির ৫০ হয় ৭৮ বলে।
নিজের প্রথম ওভারেই চমক দেখান মোসাদ্দেক। ডানহাতি এ অফস্পিসার বোল্ড করে দেন ২৯ রান করা গেইলকে। এরপর তিনি সাজঘরের পথ দেখান নিকোলাস কার্টনকে। থিতু হয়ে যাওয়া জাঙ্গু এলবিডব্ল– হন তার বলেই ৩৬ রানে। এর কিছুক্ষণ পরই মোসাদ্দেকের শিকার রোভম্যান পাওয়েল। তখন তার বোলিং ফিগার ছিল ঠিক এরকম ৬-০-৮-৪।
ইউডব্লিউআই দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলের আন্দ্রে রাসেল। কিন্তু তাকে ১১ রানেই থামান মোস্তাফিজ। এরপর সপ্তম উইকেটে ৯১ রানের জুটি গড়েন ইয়ানিক ওটলি ও কাভেম হজ। ৪৪ রান করা হজকে আউট করে জুটি ভাঙেন রুবেল। নতুন ব্যাটসম্যান বিকাশ মোহানকে ১ রানেই ফেরান বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার। শেষদিকে দ্রুত রান বাড়ান ওটলি। শেষের আগের ওভারে ছক্কা মারার চেষ্টায় আউট হন ৫৮ রানে। শেষ পর্যন্ত দলটি থামে ২২৭ রানে। মোসাদ্দেক নেন ৪ উইকেট। রুবেলের শিকার ৩।
জবাব দিতে নেমে শুরুতেই এনামুল হক বিজয়কে হারায় বাংলাদেশ। ইনিংসের তৃতীয় বলেই শূন্য রানে এলবিডব্ল– হয়ে আন্দ্রে রাসেলের শিকার হন তিনি। সেই ধাক্কা দ্বিতীয় উইকেটে সামাল দেন লিটন ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তারা যোগ করেন দলীয় স্কোরবোর্ডে ৯০ রান। এরপরই কিছুটা ছন্দপতন সফরকারীদের ইনিংসে। হাতে চোট পেয়ে ৪১ রানে অবসর নেন লিটন।
শান্তও ৪৩ রানে ফিরে যান পাওয়েলের বলে। এরপর মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির সতীর্থদের পথ ধরেন। তবে বাংলাদেশকে পথ হারাতে দেননি মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। আবার ব্যাটিংয়ে নেমে দলের হাল ধরেন লিটন। অন্যপাশে তখন দারুণ খেলে চলেছেন মুশফিক। দুজনে মিলে দলকে নিয়ে যান জয়ের দিকে। ৬১ বলে লিটন করেন হাফ সেঞ্চুরি। ৭০ রান করে শেষ পর্যন্ত হজের বলে ফেরেন তিনি। সে সময় জিততে সফরকারীদের প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৪ রান। মুশফিক হাফ সেঞ্চুরি করেন ঠিক ৫০ বলেই। এরপর টানা দুটি চারে ম্যাচ শেষ করেন এ ডানহাতি। অপরাজিত থাকেন ৭৫ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইউডব্লিউআই চ্যান্সেলরস একাদশ: ৫০ ওভারে ২২৭/৯ (গেইল ২৯, ওয়ালটন ১, জাঙ্গু ৩৬, কার্টন ৫, পাওয়েল ৬, রাসেল ১১, ওটলি ৫৮, হজ ৪৪, মোহান ১; মোসাদ্দেক ৪/১৪, রুবেল ৩/৪০)।
বাংলাদেশ: ৪৩.৩ ওভারে ২৩০/৬ (এনামুল ০, লিটন ৭০, শান্ত ৪৩, মুশফিক ৭৫* মাহমুদউল্লাহ ১০, সাব্বির ৪, মোসাদ্দেক ১১, মিরাজ ৪*; পাওয়েল ২/৩২)।
ফল: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।