মৌচাষের বিভিন্ন দিক নিয়ে গতকাল শেয়ার বিজে ‘বগুড়ায় ভ্রাম্যমাণ মৌচাষে স্বাবলম্বী দেড় সহস াধিক তরুণ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তাতে জানা যায়, শুধু বগুড়াতেই ক’জন যুবক প্রতি সপ্তাহে ১০ মণ মধু সংগ্রহ করছেন। পাইকারিভাবে প্রতি মণ মধু তারা বিক্রি করছেন ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায়। এ কাজে খরচও কম বলে জানা যায়। এতে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন স্থানীয় যুবকরা।
সরিষাক্ষেতের পাশে কাঠের বাক্স বসিয়ে মধু ও মোম সংগ্রহ করা হয়। শীতকালে সরিষার চাষ হয়। ক্ষেতে ফুল আসার সঙ্গে সঙ্গে বসিয়ে দেওয়া হয় বাক্সগুলো। সপ্তাহ অন্তর এগুলো খুলে মধু সংগ্রহ করা হয়। এতে প্রতি বাক্সে এক থেকে দুই লিটার মধু পাওয়া যায়। অন্যভাবেও মধু সংগ্রহ করা যায়, তাতে ওটা তুলনামূলক কম মেলে। ওই পদ্ধতিতে সময়ও লাগে বেশি। তবে ক্ষেতের পাশে বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহের পদ্ধতি দিন দিন বাড়ছে। এ মধুর চাহিদা বাজারে যথেষ্ট। লিচু, কালোজিরা, আম, বরইয়ের মুকুল থেকেও মধু সংগ্রহ করা যায়। সরিষার মধু অন্য ফুলের মধুর চেয়ে উৎকৃষ্ট। মধু উৎপাদন বেড়েছে আগের চেয়ে। এ ব্যবসায় করপোরেট প্রতিষ্ঠানও জড়িয়ে পড়ছে। তারা উন্নত মানের মধু বাজারে সরবরাহ করছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় ছোট ব্যবসায়ীরা মার খাচ্ছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে। অনেকে আবার দাবি করছেন, স্থানীয় ক্ষুদ্র মৌচাষিরা করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে মধু সরবরাহ করে বরং লাভবান হচ্ছেন।
সরিষার চাষ দিন দিন বাড়ছে। বাড়ছে সরিষা তেলের চাহিদাও। এ ব্যবসায়ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো জড়িয়ে পড়ছে। দেশে মধুরও একটা বাজার রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারও মন্দ নয়। মান উন্নয়ন করে সেই বাজার ধরতে পারলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও কঠিন হবে না। চিনির পরিবর্তেও মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। আর মধু পচনশীল নয় বলে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়।
সরিষাক্ষেত থেকে মধু আহরণের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা জোরদার করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্টরা আরও গবেষণা করতে পারেন, কীভাবে পর্যাপ্ত মধু আহরণ করা যায়। এক্ষেত্রে বেসরকারিভাবেও উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। সংশ্লিষ্টরা এ খাতে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানে সহযোগিতা করবেন এমনটাই প্রত্যাশা।