মৌলভিত্তির কোম্পানির ভালো অবস্থান ধরে রাখা কষ্টকর

বিনিয়োগকারীদের এখন বাজার নিয়ে আস্থা নেই। ৯ বছর ধরে বাজার তেমন ভালো অবস্থানে নেই। ভালো বিনিয়োগকারীরা চলে যাচ্ছে। বাজারের এ অবস্থায় মৌলভিত্তির কোম্পানির ভালো অবস্থান ধরে রাখা কষ্টকর। যেহেতু বাজারের টার্নওভার কম, সূচক ও ভালো মানের শেয়ারদর কমে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে স্বল্পমূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ছে এবং এক ধরনের গেম চলছে বাজারে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আমার স্টক লিমিটেড়ের সিইও মোহাম্মদ আলী জাহাঙ্গীর এবং পুঁজিবাজার টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট ইঞ্জিনিয়ার রহমত উল্লাহ।
মোহাম্মদ আলী জাহাঙ্গীর বলেন, সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা পুঁজিবাজার নিয়ে অনেক কাজ করছে নিঃসন্দেহ বলা যায়। তবে বিনিয়োগকারীর আস্থার যে জায়গাটা সেটা সরকার, বিএসইসি ও ডিএসই এখন পর্যন্ত তৈরি করতে পারেনি। যদি পারত তাহলে সূচকের অবস্থান দেখেই তার প্রতিফলন বোঝা যেত। এতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, এখনও বিনিয়োগকারীদের আস্থা সৃষ্টি করতে পারছে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আমার জানামতে, অনেক ভালো বিনিয়োগকারী বাজার থেকে চলে গেছে, যারা গত তিন থেকে চার বছর বাজারে নতুন বিনিয়োগ করেছিল। বাজারের এ অবস্থার কারণে তারা চলে গেছে। আসলে এখানেই বাজারসংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নেওয়া দরকার কীভাবে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা যায়। ৯ থেকে ১০ বছর ধরে পুঁজিবাজারে সমস্যা বিরাজমান। এটি কোনো সমস্যাই নয় যে এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা যাবে না। আসলে বাজারসংশ্লিষ্টরা এটি নিয়ে কোনো গবেষণা করেন বলে মনে হয় না। বিশ্বের সব দেশের পুঁজিবাজার এ রকম সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছে। সেসব সমস্যা উত্তরণ করে আজ তারা বড় পুঁজিবাজারে পরিণত হয়েছে। তারা কীভাবে এটি উত্তরণ করেছে, তা একটু রিসার্চ করে বের করার চেষ্টা করলেই বাজার ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, যেসব কোম্পানি বাজারে আসছে, তাদের ব্যবস্থাপনা ও নৈতিকতা যদি ঠিক না থাকে, তাহলে বিনিয়োগকারীর অর্থ দিয়ে গড়া প্রতিষ্ঠান থেকে যদি বিনিয়োগকারীদের আস্থা চলে যায়, তাহলে এই বিনিয়োগকারীদের আর পাওয়া যাবে না। এসব বিষয় মাথায় রেখে কাজ করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত ডিএসই ও বিএসইসির বিরুদ্ধে যথাযথ কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ২০১০ সালে বাজার ধসে ইব্রাহিম খালিদের রিপোর্টে অনেক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে শাস্তি দিতে পারেনি। বাজারে প্রায় ৩০ লাখ বিনিয়োগকারী রয়েছে। তাদের অর্থের কি সুরক্ষা দিতে পারছে? বরং তারা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ইঞ্জিনিয়ার রহমত উল্লাহ বলেন, আসলে এখন বিনিয়োগকারীদের বাজার নিয়ে আস্থা নেই। আবার ৯ বছর ধরে বাজার তেমন ভালো অবস্থানে নেই। ভালো বিনিয়োগকারীরা চলে যাচ্ছে। বাজারের এ অবস্থায় মৌলভিত্তির কোম্পানির ভালো অবস্থান ধরে রাখা কষ্টকর। যেহেতু বাজারের টার্নওভার কম, সূচক ও ভালো মানের শেয়ারদর কমে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে দেখা যায় স্বল্পমূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ছে এবং এক ধরনের গেম হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করছেন। এখানে বিনিয়োগকারীদের বোকা ভাবাটা ঠিক নয়। তবে তাদের সতর্ক করে দিতে পারেন। কোনো পলিসি দিয়ে বাজারে লাগাম টেনে ধরা বা বাজারকে তুলে দেওয়া এ দুটি বিষয় বিবেচনা করা ঠিক বলে মনে করি না। বাজার তার নিজস্ব গতিতে চলবে বা তাকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০