আ ফ ম আবদুল হাই, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারে এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে কয়েক দফা বন্যার পর এখন বেড়েছে ধলাই নদীর ভাঙন। ইতোমধ্যে অনেকে হারিয়েছেন বসতবাড়ি ও ফসলি জমি।
দীর্ঘদিন নদী খনন না হওয়ায় পলি জমে নাব্য হারিয়েছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদী। অল্প বৃষ্টিতেই বন্যার আশঙ্কায় থাকেন ধলাই পাড়ের মানুষ। কেননা এ বছর তিন দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিরক্ষা বাঁধ এখনও মেরামত না করায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্যার কবলে পড়তে হচ্ছে তাদের, যার ফলে হারাতে হচ্ছে ক্ষেতের ফসল ও ভিটেমাটি। ধলাই নদী দ্রুত খননসহ স্থায়ী প্রতিরোধ বাঁধ নির্মাণ করে ভাঙনের কবল থেকে নদীপাড় রক্ষার দাবি এলাকাবাসীর।
কমলগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যগঞ্জ গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদীর পাশে মানিক দাসের বাড়ি। বাড়িতে দুটি ঘরের মধ্যে একটি ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে নদীতে, বাকি ঘরটিও বিলীন হওয়ার পথে। অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই বাড়িতেই বসবাস করছে পরিবারটি।
শুধু মানিক দাস নন, এই গ্রামের ১৭টি দলিত (রবিদাস) পরিবারসহ কমলগঞ্জ সদর, আদমপুর, মাধবপুর, মুন্সীবাজার ও রহিমপুর ইউনিয়নের শতাধিক বাড়িঘর ধলাই নদীর ভাঙনে এরই মধ্যে বিলীন হয়েছে। বিলীন হয়েছে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, সর্বজনীন শ্মশানঘাট, গাছপালাসহ নানা স্থাপনা। এছাড়া সামান্য বৃষ্টি হলে নদীর পানি ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিরক্ষা বাঁধ দিয়ে ফসলি জমিতে প্রবেশ করে।
উপজেলার চতিয়া গ্রামের আবদুল হান্নান জানান, ধলাই নদীর ভাঙনে তাদের দুই ভাইয়ের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এখন তারা অন্যের বাড়িতে বসবাস করছেন। নদীগর্ভে বাড়ি বিলীন যাওয়ায় তারা এখন নিঃস্ব। বাদে উবাটা গ্রামের মরম মিয়া জানান, কয়েকবার বন্যার পানি ধানি জমিতে প্রবেশ করায় রোপণ করা চারা বারবার নষ্ট হয়েছে। এ বছর চারবার জমিতে চারা রোপণ করতে হয়েছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, স্থায়ী প্রতিরোধ বাঁধ নির্মাণের জন্য কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পানি নামলে প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙন মেরামত করা হবে।
Add Comment