যদি, কিন্তুতে ঝুলছে বাংলাদেশের সেমির স্বপ্ন

ক্রীড়া প্রতিবেদক: দুর্ভাগ্যই বলতেই হবে অস্ট্রেলিয়ার। তা না হলে গত পরশু তো বাংলাদেশের বিপক্ষে জেতার কথা দলটির। কিন্তু সবকিছু এলোমেলো করে দিল বেরসিক বৃষ্টি। তাতে অবশ্য লাভই হয়েছে টাইগারদের। ওই ম্যাচ থেকে কুড়িয়ে পাওয়া একটি পয়েন্টই এখন লাল-সবুজ প্রতিনিধিদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল। সে লক্ষ্য পূরণে মাশরাফি বিন মুর্তজাদের সামনে রয়েছে নানা ‘যদি’ ‘কিন্তু’র হিসাব।

নিজেদের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হারতে হবে অস্ট্রেলিয়ার। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে হবে বাংলাদেশের। আবার চলমান ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে টাইগারদের। সব মিলিয়ে নানা সমীকরণের মধ্যে হিসাব মিললেই কেবল শেষ চারে জায়গা করে নিতে পারবে মাশরাফি বাহিনী। যদিও কাজটি কঠিন। তারপরও টাইগার অধিনায়কের মনে পড়ছে ২০১৫ বিশ্বকাপের কথা। সেবারও বৃষ্টির কারণে অজিদের বিপক্ষে এক পয়েন্ট পেয়েছিল লাল-সবুজরা। শেষ পর্যন্ত ওই পয়েন্টের মাধ্যমে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল টিম টাইগার্স। এবারও তেমন কিছুই স্বপ্ন দেখছেন ম্যাশ। গত পরশু সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, ‘এ মুহূর্তে ২০১৫ বিশ্বকাপের কথা খুব মনে পড়ছে।  সেবার অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে একটা পয়েন্ট পেয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিলাম। পয়েন্ট ভাগাভাগিটা আমাদের খুব কাজে এসেছিল বিশ্বকাপে। আমরা আবারও সুযোগ পেয়েছি। কী হবে জানি না। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টা পেতেই হবে আমাদের।’

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গত পরশু বাঁচামরার লড়াইয়ে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। একমাত্র তামিম ইকবাল (৯৫) ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। যে কারণে মাত্র ১৮২ রানেই গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস। জবাবটা চমৎকার দিয়ে যাচ্ছিলেন অজি ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু ইনিংসের ১৬তম ওভারে তাতে বাদ সাধে বৃষ্টি। শেষ পর্যন্ত আর বল মাঠে না গড়ানোয় ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। এ ম্যাচে ভাগ্যক্রমে এক পয়েন্ট পেলেও স্বস্তিতে নেই হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। কেন এমন হলো মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের ব্যাটিং? তার উত্তর দিতে গিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘২০১১ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেললাম আমরা। ওদের বিপক্ষে খেলাটা কিন্তু সব সময়ই খুব কঠিন। আজকের (পরশু) ম্যাচেও এগিয়ে ছিল তারা। দুর্দান্ত বোলিং করেছে। তামিম ইকবাল ছাড়া আমাদের আর কোনো ব্যাটসম্যান ভালো খেলতে পারেনি। তবে আমরা মনে করি, আমরা এখনও টিকে আছি। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ পারফরম্যান্স দেখাতে হবে। দেখা যাক কী হয়!’

প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভাগ্যক্রমে এক পয়েন্ট পেলেও সমবেদনা ঠিকই রয়েছে মাশরাফির। কেননা নিশ্চিত জেতা ম্যাচ বৃৃষ্টির কারণে হাতছাড়া হয়েছে অজিদের। এর আগেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছিল দলটির। তবে পরশুর ম্যাচের পর মাশরাফি এ ব্যাপারে বলেন, ‘আপনারা যদি আজকের (পরশু) ম্যাচের দিকে তাকান, তাহলে এটা না বোঝার কোনো কারণ নেই অস্ট্রেলিয়া আমাদের চেয়ে অনেক ভালো খেলেছে। অনেকটাই এগিয়ে ছিল তারা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচটাতেও অস্ট্রেলিয়া একই পরিস্থিতিতে পড়েছিল। তবে এটা ঠিক, আবহাওয়ার ওপর তো আমাদের কারও হাত নেই।’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আগামী ৯ জুন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। যে ম্যাচে জয় ছাড়া ভিন্ন কোনো পথ খোলা নেই টাইগারদের সামনে। তার আগে তো রয়েছেই ‘যদি’, ‘কিন্তু’র নানা হিসাব-নিকাশ। হয়তো সবকিছু সময়ই বলে দেবে। আসলেই কি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে যাচ্ছে টিম টাইগার্স?