নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি কারখানার উন্নয়নমূলক কাজ এবং কার্যক্রম সম্প্রসারণ-সংক্রান্ত এক গুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রকাশিত তথ্যমতে, প্রথমত, কোম্পানিটি নারায়ণগঞ্জ জেলার কুতুবপুরে অবস্থিত কোম্পানিটির কার্টন ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটের জন্য স্বয়ংক্রিয় বেলিং প্রেস, ডাস্ট কালেক্টর এবং চীন থেকে প্রয়োজনীয় মানসম্পন্ন জিনিসপত্রসহ একেবারে নতুন ডব্লিউজে ১৫০-১৮০০-১১ মডেলের ডাবল ওয়াল ঢেউতোলা বোর্ড প্রোডাকশন লাইনের এক সেট যন্ত্রপাতি আমদানি করবে। এতে কোম্পানির প্যাকেজিং পণ্যগুলোর জন্য প্রতি বছর ১০২ মিলিয়ন পিস বিভিন্ন আকারের ঢেউতোলা কার্টন তৈরির উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। সিøটার, স্ট্যাকার, ওভারহেড ক্রেন, ট্রলি প্রভৃতির পাশাপাশি আরও কিছু প্রয়োজনীয় স্থানীয় যন্ত্রপাতিসহ আমদানি এবং লাইন ইনস্টলেশনের জন্য প্রায় ১১ কোটি টাকা খরচ হবে। তবে এর ফলে কার্টনের বর্তমান ঘাটতি পূরণ হবে।
দ্বিতীয়ত, নারায়ণগঞ্জ জেলার কুতুবপুরে কোম্পানির স্ন্যাকস ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটে দ্বিতীয় বেকড স্ন্যাকস প্রসেসিং লাইন স্থাপনের জন্য কোম্পানিটি ভারত ও চীন থেকে ওয়াটার সফটনার, চিলার, কুলিং টাওয়ার, ব্যারেল সেটসহ মেশিনারি এবং খুচরা যন্ত্রাংশের একটি সম্পূর্ণ সেট আমদানি করবে একইসঙ্গে স্থানীয় বাজার থেকে সলুশন প্রিপারেশন অ্যান্ড মেজারিং ট্যাংক, এলপিজি সিস্টেমস, ইউটিলিটি সাপ্লাই লাইনস, পাইপস, ফিটিংস কেব্লস প্রভৃতি প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য এবং তা স্থাপনের জন্য তিন কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এই দ্বিতীয় বেকড স্ন্যাকস প্রসেসিং লাইন স্ন্যাকসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে প্রতি মাসে ২০০ টন বেকড স্ন্যাকসের অতিরিক্ত উৎপাদন নিশ্চিত করবে।
তৃতীয়ত, নারায়ণগঞ্জ জেলার কুতুবপুরে অবস্থিত কোম্পানির কার্টন এবং স্ন্যাকস ইউনিটের ৫তলা সম্প্রসারণ ভবনের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করবে। সেখানে প্রায় ৪৪ হাজার ১০০ বর্গফুট সিভিল কনস্ট্রাকশন ছাড়াও সেখানে কার্গো লিফ্ট, এয়ার সার্কুলেশন সিস্টেম ইত্যাদি স্থাপনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য আনুমানিক প্রায় ১২ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে এবং দ্বিতীয় পর্বের এ কাজ সম্পন্ন হলে ইউনিটগুলোতে কাঁচামাল, প্যাকিং-সামগ্রী এবং তৈরি পণ্যের জন্য সঞ্চয়স্থানের ঘাটতি দূর হবে।
চতুর্থত, লুসার্ন কোকো অ্যান্ড চকলেট প্রোডাক্টস লিমিটেডের সঙ্গে ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ থেকে ৩১ আগস্ট, ২০২৪ পর্যন্ত ২ বছরের জন্য তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধররের চকলেট পণ্য কিনে তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ড নামে বিক্রয়ের জন্য একটি চুক্তি সম্পাদন করছে।
পঞ্চম, প্রক্রিয়াকরণ এবং সঞ্চয়স্থানের ঘাটতি মেটাতে এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে লোলাটি কারখানার কাছে নতুন কেনা জমিতে ৯ হাজার বর্গফুট এলাকায় আরসিসি বেস, কলাম, মেঝে এবং ইটের প্রাচীরসহ ফ্লোর এরিয়া টিন শেড নির্মাণের ব্যবস্থা করবে।
উল্লেখ্য, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন হচ্ছে। অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি এবং পরিশোধিত মূলধন ১৯৯ কোটি ৯৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৭২৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১৯ কোটি ৯৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮৬ শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৩৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ২০ দশমিক ২৭ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীর কাছে ২৫ দশমিক ১৯ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ১৭ দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এদিকে ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ৫৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১০ টাকা ১৯ পয়সা, আর ২০২১ সালের ৩০ জুন তারিখে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৪৬ টাকা ২১ পয়সা। এর আগে ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ৫২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১০ টাকা ১৩ পয়সা, আর ২০২০ সালের ৩০ জুন তারিখে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৪১ টাকা ২২ পয়সা। ওই সময় শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে আট টাকা ৮৪ পয়সা।