মীর কামরুজ্জামান মনি, যশোর: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আগে থেকেই অস্থির হয়ে আছে চালের বাজার। এর মধ্যে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে যশোরের বাজারে বেড়েছে চালের দাম। মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে মানভেদে কেজিতে অন্তত ২-৩ টাকা বেড়েছে চালের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় তা চালের দামের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের কারণেও মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে বলে দাবি তাদের। এমন অবস্থায় বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা জরুরি বলে মনে করছেন ভোক্তারা। গতকাল যশোরের বড়বাজারে মাত্র দু দিনের ব্যবধানে সব ধরনের চাল মণপ্রতি ১২০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ প্রতিকেজি ৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
যশোর বড়বাজার চাল বিক্রেতা আরমান জানান, গুটি স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি মানভেদে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, বিআর-২৮ ধানের চাল ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা, কাজললতা ৫৫ থেকে ৫৯ টাকা, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৬ টাকা, বাংলামতি ৭৪ থেকে ৭৮ টাকা ও নাজিরশাইল চাল ৭৮ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। মাত্র দু দিনের ব্যবধানে এসব চালে প্রতি কেজিতে ৩ টাকা করে বেড়েছে। এর আগে এক মাস আগে একবার বেড়ে বাজারে চালের দাম মাসাধিকখাল এক জায়গায় স্থির ছিল বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
যশোর বড়বাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুশীল কুমার বিশ্বাস জানান, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে চালের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় সব ধরনের চালের কেজিতে ৩ টাকা করে বেড়ে গেছে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে হাটেও ধান বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। সব মিলিয়ে বাজারে এক অস্থির পরিবেশ বিরাজ করছে।
এদিকে এই দু দিনে যশোরের বাজারে চিনির দামও যথেষ্ট বেড়েছে। প্রতি কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে গতকাল ৮৪ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এর আগে ৮০ ও ৮১ টাকা কেজি দরে চিনি বিক্রি হচ্ছিল। বেড়েছে আমদানি পণ্য জিরার দামও। ৩৬০ টাকা কেজি দরের জিরাতে ৮০ টাকা বেড়ে গতকাল ৪৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম বাড়তি ও সংকট দেখা দেয়ায় আমদানিকারকরা চাল আমদানিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই দুয়ে মিলে সামনের দিনগুলোতে বাজারে এর প্রভাব পড়তে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ২০২২ শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। নতুন দাম অনুযায়ী ডিজেল ও কেরোসিন ৮০ টাকার স্থলে ১১৪ টাকা, পেট্রল ৮৬ টাকা স্থলে ১৩০ টাকা ও অকটেন ৮৯ টাকার স্থলে ১৩৫ টাকা। অর্থাৎ ডিজেল ও কেরোসিনে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ, পেট্রলে ৫১ দশমিক ১৭ শতাংশ ও অকটেনে ৫১ দশমিক ৬৯ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে সরকার।