যারা সন্তান নেবেন তাদের পুষ্টিকথা

অপুষ্টিতে আক্রান্ত মায়ের শিশু অপুষ্টি নিয়ে জন্মাতে পারে এবং ওই মা গর্ভকালীন ও প্রসব-পরবর্তী নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারেন। তাই গর্ভধারণের আগে থেকে মাকে তার স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ব্যাপারে যতœবান হতে হবে। মা কৃশকায় হন বা বেশি ওজনের হলে উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন অর্জন করতে হবে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়েদের গর্ভধারণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ৩৫ মাস আগে থেকে খাওয়ার বড়ি বাদ দিয়ে ইনসুলিন নেয়া শুরু করতে হবে। রক্তে হিমগ্লোবিন এ১সি-এর মাত্রা ৬.৫ শতাংশের কাছাকাছি এলে চিকিৎসকের সম্মতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে হবে।

গর্ভধারণের আগে যদি মা আয়রনের ঘাটতিতে ভুগলে তিনি গর্ভাবস্থায় আয়রনের ঘটতিজনিত রক্তাল্পতায় ভুগতে পারেন। তার সন্তানও আয়রনের ঘটতি নিয়ে জন্মাতে পারে। মা গর্ভধারণের আগে ক্যালসিয়ামের ঘটতিতে ভুগলে তিনি প্রসব-পরবর্তী ক্যালসিয়ামের ঘাটতিজনিত নানা অসুখে আক্রান্ত হতে পারেন।  তাবে ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খেতে হবে এবং সেই সঙ্গে কিছু সময় হালকা রোদে (ভিটামিন ডি পেতে) নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করতে হবে। গর্ভধারণের প্রস্তুতির সময় থেকে মাকে দৈনিক ০.৪ মিলিগ্রাম ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করতে হবে শিশুর নিউরাল টিউব ডিফেক্ট ও বিভিন্ন জন্মত্রুটি এড়াতে। ফলিক অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার হলো ব্রকলি, বাঁধাকপি, বিভিন্ন শাক, মটরশুঁটি, শিম, কমলা, বাতাবিলেবু, মাল্টা, কলা, তরমুজ, টমেটো, মাংস, কলিজা, ডিম ইত্যাদি। যেসব মা গর্ভধারণের আগে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি খেতেন, তারা অবশ্যই ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন বি১২-সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাবেন। ভিটামিন বি-৬-সমৃদ্ধ খাবার হলো চিড়া, ডাল, মটরশুঁটি, কলা, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, গরু ও খাসির মাংস, কলিজা, ডিম, চর্বিযুক্ত মাছ, মিষ্টি আলু, পালংশাক, গাজর ইত্যাদি। আর ভিটামিন বি-১২-সমৃদ্ধ খাবার হলো মাংস, কলিজা, ডিম, দুধ, দই, ডিম, পনির, মাশরুম, চিংড়ি ইত্যাদি। গর্ভধারণের আগে মা যেন দৈনিক ৫০০০ আইইউএর বেশি ভিটামিন এ (রেটিনল বা রেটিনয়িক অ্যাসিড আকারে) না খান। গর্ভধারণে ইচ্ছুক মাকে ক্যাফেইন গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। এ সময় দৈনিক দুই কাপের বেশি কফি বা চার কাপের বেশি চা পান করা সমীচীন নয়। ধূমপান ও অ্যালকোহল অবশ্যই বর্জনীয়।

মো. নাহিদ নেওয়াজ

পুষ্টিবিদ, ঝিনাইদহ ডায়াবেটিক হাসপাতাল, ঝিনাইদহ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০