শেয়ার বিজ ডেস্ক: কারাবন্দি যুক্তরাষ্ট্রের দুই নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে ভেনেজুয়েলা। বাইডেন প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাস সফরের পর সদিচ্ছার অংশ হিসেবে তাদের মুক্তি দেয়া হয়। খবর: রয়টার্স।
ওই বৈঠকে শুধু ভেনেজুয়েলায় বন্দি মার্কিনিদের মুক্তি দেয়ার দিকে নজর দেয়া হয়নি। তেল উৎপাদক দেশ ভেনেজুয়েলার ওপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের তেল নিষেধাজ্ঞা কমানোর সম্ভাবনা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন গুস্তাভো কার্ডেনাস। ২০১৭ সালে তাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সিটগো পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের ছয় নির্বাহীকে গ্রেপ্তার করে ভেনেজুয়েলা। পরে তাদের অভিযুক্ত করা হয়। এই অভিযোগকে ষড়যন্ত্র বলে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের তরফ থেকে ৯ বন্দির মুক্তি দাবি করা হয়। তাদের মধ্যে সিটগোর ছয় নির্বাহীসহ দুই সাবেক গ্রিন বেরেটস ও সাবেক এক মার্কিন মেরিন সেনা রয়েছেন। তবে মাত্র দুই বন্দিকে মুক্তি দেয়া হল। অবশ্য এতে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে আলোচনার পথ উš§ুক্ত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মুক্তি পাওয়া অন্য ব্যক্তি কিউবান বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক জর্জ ফার্নান্দেজ। তাকে ভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বর্তমানে কোথায় রয়েছেন, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে আশা করা হচ্ছে মুক্তির পরপর তাদের ভেনেজুয়েলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হবে।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ভেনেজুয়েলায় বিনা কারণে বন্দি দুই আমেরিকানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছি। তারা আবার তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে পারবেন।
ইউক্রেন হামলার ঘটনায় রাশিয়াকে একঘরে করতে তেলনির্ভর ভেনেজুয়েলাকে পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় জ্বালানির বিকল্প উৎসের খোঁজে ভেনেজুয়েলা সফরে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ওই কর্মকর্তারা। এ কারণে কয়েকজন কংগ্রেস সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রাশিয়ার মিত্রদেশ ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন তারা।
এদিকে ভেনেজুয়েলা তেল সংকট কাটাতে উৎপাদন বাড়াতে চায়। ভেনেজুয়েলান অয়েল চেম্বারের প্রধান রেইনালদো কুইন্তেরো বলেন, বর্তমানে প্রতিদিন আট লাখ ব্যারেল তেল উত্তোলন করে ভেনেজুয়েলা। এর পরিমাণ বাড়িয়ে প্রতিদিন ১২ লাখ ব্যারেল উত্তোলন করার মতো অবকাঠামো তাদের দেশের রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের নির্বাচনে কারচুপি করে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো পুনর্নির্বাচিত হয়েছেনÑএ অভিযোগে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে যুক্তরাষ্ট্র। মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দেশটির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ কারণে ২০১৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভেনেজুয়েলার প্রধান রপ্তানি পণ্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়।
