Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 9:42 pm

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে বেড়েছে ন্যূনতম মজুরি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে। খ্রিষ্টীয় নতুন বছর বরণ করে নেয়ার ঐতিহ্যগত প্রথায়ও মূল্যস্ফীতির প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। এরপরও দেশটির বিভিন্ন রাজ্য ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়েছে। খবর: সিএনএন।

যুক্তরাষ্ট্রের ২৩টি রাজ্যে ঘণ্টাপ্রতি ন্যূনতম মজুরির পরিকল্পনা আগেই করা হয়েছিল, যা ২০২৩ সালের প্রথম দিন থেকে কার্যকর হয়েছে। এদিন থেকে ঘণ্টায় সর্বনি¤œ মজুরি ১৫ ডলার করা হয়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয়ভার লাঘবের জন্য এ মজুরির হার নির্ধারণ করেছে রাজ্যগুলো। ইকোনমিক পলিসি ইনস্টিটিউটের (ইপিআই) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এতে ৮৪ লাখ কর্মী উপকৃত হবেন এবং তাদের জন্য অতিরিক্ত ৫০০ কোটি ডলার খরচ হবে।

ইপিআই-এর তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩০টি শহর ও কাউন্টিও ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর ঘোষণা করেছে।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতির হার আগের মাসকে ছাপিয়ে যায়। দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের জুনে ২০২১ সালের জুনের তুলনায় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ১। এছাড়া মে মাসের সাপেক্ষে জুনে মূল্যস্ফীতি হার দাঁড়ায় ১ দশমিক ৩। মূলত পেট্রোল ও খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতির হার এতটা বাড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, জুনে মূল্যস্ফীতির এ হার ১৯৮১ সালের নভেম্বরের পর সর্বোচ্চ, মে মাসে যার হার ছিল ৮ দশমিক ৬।

ইপিআই-এর গবেষক সহকারী সেবাস্টিয়ান মার্টিনেজ হিকি বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্মীরা কিন্তু তাদের বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায় না। এমনকি কভিড-১৯ মহামারির আগে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কাউন্টি ঘণ্টাপ্রতি ১৫ ডলার মজুরি চালু করেনি।

মহামারি ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পরবর্তী সময়ে আমেরিকায় সম্পদের ব্যবধান বেড়েছে। অর্থাৎ ধনী-গরিবের ব্যবধান বেড়েছে। বিগত দুই বছর ধরে নি¤œ আয়ের শ্রমিকরা কর্ম পরিবেশের মান উন্নয়ন ও বেতন বাড়াতে আন্দোলন করছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অনেক বড় সংস্থা মজুরি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারের কাঠামোগত উত্থানে প্রভাব ফেলে মহামারি। এ কারণে কর্মী সরবরাহে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয় এবং এখনও কর্মীদের প্রকট চাহিদা রয়েছে। নিয়োগদাতারা গত বছরজুড়ে কর্মী সংকটে ভুগেছেন; এ কারণে নতুন কর্মী নিয়োগ দিতে এবং বিদ্যমান কর্মীদের ধরে রাখতে বার্ষিক ঘণ্টাপ্রতি মজুরি বাড়ান। একই সময় খুচরা এবং খাদ্যের মতো প্রতিযোগিতামূলক খাতের কর্মীরা মূল্যস্ফীতির সত্ত্বেও তাদের বেতন বাড়ান।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাট বার্কেলের অর্থনীতির অধ্যাপক মাইকেল রিচ বলেন, একেক খাতের হিসাব একেক রকম। কেননা নি¤œ পর্যায় থেকে বেতন বেড়েছে, যা মূল্যস্ফীতির চেয়ে দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এর অর্থ যেসব রাজ্যে ঘণ্টাপ্রতি ৭ ডলার ২৫ সেন্ট মজুরি দেয়া হতো, সেখানকার কর্মীরা আগেও ন্যূনতম মজুরির বেশি পেতেন।

তিনি আরও বলেন, অনেক রাজ্য ও শহরে ন্যূনতম মজুরি আরও ৭ ডলার বাড়লেও শ্রম খরচ কোথাও বাড়েনি। এর অর্থ রেস্তোরাঁয় খাবারের দাম বাড়ছে না।

এর আগে ২০০৯ সালে ফেডারেল সরকার ন্যূনতম মজুরি ৭ ডলার ২৫ সেন্ট কার্যকর করে। তখন ২০টি রাজ্য এ মজুরির সমান অথবা কম মজুরি বাস্তবায়ন করে। আরও আগে ১৯৬৮ সালে প্রথম ফেডারেল সরকার ন্যূনতম মজুরি ১ ডলার ৬০ সেন্ট করে।

চলতি বছরের প্রথম দিন যেসব রাজ্য ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ডেলাওয়ার। এ রাজ্যে ১০ ডলার ৫০ থেকে মজুরি বাড়িয়ে করা হয় ১১ ডলার ৭৫ সেন্ট। ম্যাসাচুসেটসে ১৪ ডলার ২৫ সেন্ট থেকে বাড়িয়ে ১৫ ডলার করা হয়। সবচেয়ে কম বেড়েছে মিশিগানেÑএ রাজ্যে ৯ দশমিক ৮৭ ডলার থেকে বাড়িয়ে ন্যূনতম মজুরি করা হয়েছে ১০ ডলার ১০ সেন্ট।