Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 9:14 am

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ সত্ত্বেও রফতানি বাড়ছে চীনের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যেই চীনের পণ্য রফতানি অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বিশ্লেষকদের সব পূর্বাভাস ভুল প্রমাণিত হয়েছে। জুলাইয়ে চীনের পণ্য রফতানি তিন দশমিক তিন শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ রফতানি দুই শতাংশ কমার পূর্বাভাস করেছিলেন বিশ্লেষকরা। অবশ্য চীনের রফতানি বাণিজ্য এখনও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। খবর: বিবিসি।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের পণ্য আমদানির পরিমাণ জুলাইয়ে কমেছে পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ। যদিও আগে এটি আট দশমিক তিন শতাংশ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে চীনের অর্থনীতিতে এখনও ঝুঁকি রয়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ আগামী মাসেই নতুন করে চীনা পণ্যে শুল্কারোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
অর্থনীতিবিদ জুলিয়ান ইভান্স প্রিটচার্ড বলেছেন, চীনের পণ্য রফতানির বর্তমান অবস্থা আগামী প্রান্তিকগুলোতেও অব্যাহত থাকবে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে আরও অন্তত ৩০ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে শুল্কারোপ করার পরিকল্পনা করছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে চলমান বাণিজ্য আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় নতুন এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্প্রতি উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় যখন বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে ‘কারেন্সি ম্যানিপুলেটর’র অভিযোগ তোলে ওয়াশিংটন। সম্প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে চীনের মুদ্রা ইউয়ানের মান সামান্য হ্রাস করেছে চীন। পিপলস ব্যাংক অব চায়না বলেছে, বাণিজ্য সংরক্ষণ নীতির আওতায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া চীনা পণ্যের ওপর ক্রমেই শুল্কারোপ বৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ই গ্যাং পরে বলেছেন, চীন প্রতিযোগিতামূলক মূল্যহ্রাসের মধ্যে জড়াবে না।
ইউয়ানের মান কমানোর ফলে চীনের বাণিজ্য আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রায় কেনা আরও সস্তা হবে। চীনের সিদ্ধান্তের ফলে এশিয়ার পুঁজিবাজারে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ করা যায়।
এর আগে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও বেইজিং বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক চীনকে ‘কারেন্সি ম্যানিপুলেটর’ আখ্যা দেওয়ায় বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হবে এবং ব্যাপক প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতিতে।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘চীন ও বিশ্বের অন্য অঞ্চল থেকে বড় অঙ্কের অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে যুক্ত হয়েছে।’ এ সময় তিনি বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে মার্কিন কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানান। তিনি বাণিজ্যযুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়া নিয়ে ভয়ের কিছু নেই বলে আশ্বাস দেন। ১৯৯৪ সালে সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে মুদ্রা নিয়ে কারসাজির অভিযোগ করেছিল।
চীন তাদের মুদ্রার মান এক দশমিক চার শতাংশ কমিয়ে দশককালেরও বেশি সময় পর প্রথমবার ডলারপ্রতি সাত ইউয়ানের বেশি করার পর ওয়াশিংটন এ পদক্ষেপ নিল। যদিও ওয়াশিংটনের দিক থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই সোমবার ট্রাম্প টুইটারে চীনের বিরুদ্ধে ইউয়ান নিয়ে কারসাজির অভিযোগ করেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে চীনের আরও ৩০ হাজার কোটি ডলারের রফতানি পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করে পুঁজিবাজারকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিলেন। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুদ্রা কারসাজির অভিযোগ ধারাবাহিকভাবে অস্বীকার করলেও ইউয়ানের
বিনিময় হারের ওপর যে চীনা কর্তৃপক্ষের প্রভূত নিয়ন্ত্রণ আছে, সোমবার চীনের পিপলস ব্যাংক তা স্পষ্ট করেছে।