যুক্তরাষ্ট্রে আরেক দফা বাড়ল সুদের হার

শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তুলনামূলক ভাল থাকা সত্ত্বেও চলতি বছরে তৃতীয়বারের মতো নীতিনির্ধারণী সুদের হার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। গত বুধবার তৃতীয় দফায় সুদের হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এক দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে এক দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। ২০০৮ সালের বিশ্বমন্দায় এ পর্যন্ত পঞ্চমবার সুদের হার বাড়ল। এখন এটি সর্বোচ্চ সুদহার। খবর বিবিসি, সিএনএন মানি।

দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও শ্রমবাজার শক্তিশালী অবস্থানে থাকার পরও সুদের হার আবার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল ফেডারেল রিজার্ভ। ফেড প্রধান জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং তার প্রতিফলন ঘটানো।’ বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, আগামী ২০১৮ ও ২০১৯ সালেও সুদের হার বাড়াতে পারে সরকার, যা উদ্বেগের বিষয়।

এদিকে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়ানোর এক দিন আগে মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিরক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়। ট্রাম্প এ খাতে ৭০ হাজার কোটি ডলারের একটি বার্ষিক প্রতিরক্ষা বিলে সই করেন, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এ বিলের আওতায় থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা নিয়োগ, যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ তৈরি ও আমদানি।

চলতি বছরের মার্চ ও জুনে দু’দফা সুদের হার বাড়ায় ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক। ওই সময় নীতি-নির্ধারণী সুদের হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেন কেন্দ্রীয় এ ব্যাংকের প্রধান জ্যানেট ইয়েলেন। তখন সুদের হার বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে এক শতাংশ করা হয়।

যে হারে ব্যাংকগুলোকে ধার দেওয়া হয়, তাকে ‘ফেডারেল ফান্ডস রেট’ বা ‘নীতিনির্ধারণী সুদহার’ বলা হয়।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এখন বেকারত্বের হার সর্বনিম্ন। অর্থনৈতিক ইন্ডিকেটর যেমন মূল্যস্ফীতিও কম, কিন্তু এর পরও সুদের হার বাড়ানো হলো। যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা সূচক অপ্রত্যাশিতভাবে গত মাসে কমে গিয়েছিল, যা গত ১৬ মাসে সর্বনিম্ন রেকর্ড। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফের সুদের হার বাড়ানো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

বিশ্লেষকদের মতে, সুদের হার বাড়ানোর ফলে মধ্যবিত্তের ওপর প্রভাব পড়বে, যাতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিবর্তে ক্ষতির দিকই বেশি দেখছেন তারা। তারা বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার তিন শতাংশের ওপরে। আর বেকারত্ব হার ২০০০ সাল থেকে সর্বনি¤œ। ফলে এ অবস্থায় সুদের হার বাড়ানো মধ্যবিত্তের জন্য হুমকিস্বরূপ।

ফেডের স্টেটমেন্টে বলা হয়, দ্রব্যের মূল্য সম্প্রতি পড়ে যায়। ফলে মূল্যস্ফীতি দুই শতাংশের নিচে রাখাই ফেডের লক্ষ্য। তবে ব্যাংকের প্রধান জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, সম্প্রতি দ্রব্যের মূল্য পড়ে যায়। বিশেষ করে সেলফোন, খাদ্যদ্রব্য ও মেডিসিন পণ্য। তাই মূল্যস্ফীতি ধরে রাখাই ফেডের উদ্দেশ্য।

প্রসঙ্গত, চলতি বছর ট্রাম্প নতুন করনীতি প্রণয়ন করেন। তাতে ধনীদের জন্য আগের ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনে। আর আগস্টে মিশোরিতে এক সভায় ট্রাম্প ঘোষণা দেন প্রবৃদ্ধি তিন শতাংশের ওপরে উন্নীত করার, যার ফল চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকেই পেয়ে গেলেন ট্রাম্প। গত প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ছিল তিন দশমিক এক শতাংশ। সম্প্রতি টেক্সাস ও ফ্লোরিডাসহ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে হ্যারিকেন ইর্মা ও হার্ভে আঘাত হানায় দেশটিতে ১৩১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে বেসরকারি খাতে ১২১ বিলিয়ন ডলার আর সরকারি খাতে ১০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। এর পরও প্রবৃদ্ধির ঊর্ধ্বগতি ছিল।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০