শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নিজেদের মধ্যে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়াতে রাজি হয়েছে। দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকে এ বিষয়ে ঐকমত্য এসেছে। খবর: বিবিসি ও সিএনএন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বেইজিং সফর করছেন। গতকাল রোববার তিনি বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। গতকাল সোমবার চীনের শীর্ষ
কূটনীতিক ওয়াং ইর সঙ্গেও বেইজিংয়ে বৈঠক করেছেন ব্লিঙ্কেন।
বৈঠকে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও কিন গ্যাং বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হন। কভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট চলাচল ন্যূনতম পর্যায়ে রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, দুই দেশের শীর্ষ কূটনীতিকেরা
যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর জন্য একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বর্ধিত আলোচনায় তারা এ বিষয়ে একমত হন। তিনি আরও বলেন, ফ্লাইটের কোনো আনুষ্ঠানিক সংখ্যা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত রোববার চীনে পৌঁছান। প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনো শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক বেইজিং সফর করছেন। বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে দুই পরাশক্তির চলমান উত্তেজনার মাঝে কূটনৈতিক সফরে যান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার পথ খুঁজতে আলোচনা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কূটনীতিকরা। ব্লিংকেনের এই সফরটি গত ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে বেলুন উড়ার ঘটনায় সফর স্থগিত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, সেগুলো চীনের পাঠানো গোয়েন্দা বেলুন ছিল। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে বেইজিং। বিশ্ববাণিজ্য, অর্থনীতি এবং তাইওয়ান বিষয়ে চলমান উত্তেজনা এই সফরে প্রাধান্য পায়। চীনের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, দুই পক্ষের সম্পর্ক কীভাবে আরও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে বজায় রাখা যায় সেই পথ খোঁজার চেষ্টা করব।
সফরের প্রথম দিনই চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংকে ওয়াশিংটন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটন সফরে সম্মত হয়েছেন। রোববার বেইজিংয়ে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে কিন গ্যাংয়ের বৈঠক হয়। দুজনের মধ্যে ‘গঠনমূলক’ আলোচনার পর কিন গ্যাং ওয়াশিংটন সফরে যেতে সম্মত হন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাট মিলার বলেন, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে (কিন গ্যাং) যুক্তরাষ্ট্র সফরের জন্য ব্লিঙ্কেন আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। পারস্পরিক উপযুক্ত সময়ে এই সফরের সময় নির্ধারণে তারা সম্মত হয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, দুই দিনের চীন সফরকালে দেশটির প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গেও অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
চীন সফরের শেষ পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গতকাল বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কয়ারে গ্রেট হল অব দ্য পিপলে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিয়ের সঙ্গে ব্লিনকেনের বৈঠক হয়। বৈঠকে শি বলেন, চীন নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে এবং দুই পক্ষ (চীন ও যুক্তরাষ্ট্র) প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও আমি বালিতে যে সাধারণ বোঝাপড়ায় পৌঁছেছিলাম তা অনুসরণ করতে সম্মত হয়েছে। আগামী নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিত জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে বলেন তিনি। তিনি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতির জন্য ব্লিনকেনকে আরও আরও ইতিবাচক ভূমিকা রাখার কথা বলেন।
দুই পক্ষ অগ্রগতি ঘটিয়ে কিছু নির্দিষ্ট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছেছে, এট খুব ভালো বলেও মন্তব্য করেছেন শি। চীনের প্রেসিডেন্ট কিছু নির্দিষ্ট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছানোর কথা উল্লেখ করলেও ব্লিনকেনের সফর চলাকালে একমাত্র যে সমঝোতার ঘোষণা দেয়া হয়েছে তা হলো, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাংয়ের যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরিকল্পনা এবং দুই দেশের মধ্যে আরও কিছু ফ্লাইট এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগ।
