যুদ্ধবিরতির আদেশ কেন দিচ্ছেনা আইসিজে

শেয়ার বিজ ডেস্ক : গাজায় গণহত্যার মতো অপরাধ ঠেকাতে এবং বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের সহায়তা দিতে ইসরাইলকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। ইসরাইলের বিরুদ্ধে আনা দক্ষিণ আফ্রিকার যুদ্ধাপরাধ মামলার মূল অ্যাজেন্ডা দূরে রেখে শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরের আদালতে এমন নির্দেশনা দেন আইসিজে।

এদিন এ মামলার রায় পড়ে শোনান আইসিজে’র বিচারকমণ্ডলীর প্রেসিডেন্ট জোয়ান ই দোনোগু। গাজায় যুদ্ধবিরতি অথবা ইসরাইলি সামরিক অভিযান বন্ধের যে আদেশ দক্ষিণ আফ্রিকা চেয়েছিল সে বিষয়ে কোনো রায় দেননি বিশ্ব আদালত হিসাবে পরিচিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এ আদালত।

যুদ্ধবিরতি অথবা ইসরাইলের সামরিক অভিযান বন্ধের কোনো নির্দেশনা না আসায় আইসিজে’র এই রায়ের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনিরা। তবে হতাশ হলেও তারা ‘বিস্মিত নন’ বলে জানিয়েছেন। কারণ, গাজায় রক্তপাত বন্ধে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে না পারায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বা বিশ্ব বিচার ব্যবস্থাকে আর বিশ্বাস করেন না অধিকাংশ ফিলিস্তিনি। আলজাজিরা।

গাজায় গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের মৃতের সংখ্যা ২৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১৯ লাখ মানুষ। এই বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে একজন আহমেদ আল-নাফফার (৫৪)। মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহতে আল-আকসা শহিদ হাসপাতালের বাইরে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।

আইসিজে’র রায় সম্পর্কে আল-নাফফার বলেন, ‘যদিও আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর আস্থা রাখি না, কিন্তু আদালত যুদ্ধবিরতির বিষয়ে রায় দেবে- তা নিয়ে আমি কিছুটা হলেও আশাবাদী ছিলাম।’ কিন্তু আইসিজে’র রায় শুনে তার স্বপ্ন ভেঙে পড়ে। আল-নাফফার বলেন বলেন, ‘আদালত একটি ব্যর্থতা। আমি মর্মাহত। দুর্ভাগ্যবশত কেউ যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে না। যুদ্ধবিরতির পদক্ষেপ না নিয়ে সবাই আমাদের ধ্বংস দেখছে।’

আইসিজে’র রায়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমি ভুল ছিলাম। আমি দুঃখিত এবং হতাশ বোধ করছি। তারা (ইসরাইলিরা) আমাদের সবাইকে মেরে ফেলুক। গাজায় পারমাণবিক বোমা ফেলে আমাদের এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিক।’
গাজায় আরেক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মোহাম্মদ আল-মিনাভি (৪৫)। তিনিও আল-আকসা শহিদ হাসপাতালের বাইরে একটি তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছেন।

আইসিজে’র রায় শোনাটাও তার কাছে ‘অর্থহীন’ বলে জানান আল-মিনাভি। বলেন, ‘আমি আশাবাদী নই। দুর্ভাগ্যবশত ইসরাইলকে কেউ থামাতে পারবে না।’ তবে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আল-মিনাভি। ইসরাইলের বিরুদ্ধে মামলা করা তার কাছে অভূতপূর্ব ঘটনা বলে উল্লেখ করেন।

খাদ্য ও পানির ভয়াবহ অভাবের মধ্যেই গাজায় হাজার হাজার গর্ভবতী নারীর একজন তাহরির শেখ খলিল (৩৫)। স্বামী ও পাঁচ সন্তানসহ আল-আকসা শহিদ হাসপাতালের কাছে একটি তাঁবুতে অবস্থান করছেন তিনি। তাহরির বলেন, আইসিজে’র রায় শুনেছেন তার স্বামী। শুরুতে তার স্বামী কিছুটা আশাবাদী ছিলেন, কিন্তু এখন আর না। তাহরির বলেন, ‘আমি কিছুতেই আশাবাদী নই। যা ঘটছে তা আমাদের কষ্টের কিছুই পরিবর্তন করবে না। যুদ্ধ, হত্যা এবং ধ্বংস চলতেই থাকবে।’

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০