যুদ্ধের প্রভাবে তেল আমদানিতে দিনে লোকসান ৮০ কোটি টাকা: প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশে তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এখন দিনে ৮০ কোটি টাকা লোকসান গুনছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে গ্যাসের দামও কয়েকগুণ বেড়েছে। ভর্তুকি বাড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার।

সকালে বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স অব বাংলাদেশ (এফইআরবি) ও নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি যৌথ উদ্যোগে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখনও ৬৪ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় গ্যাস থেকে। আবার গরম বাড়তে থাকায় প্রতিদিন ২০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। গ্রাহক পর্যায়ে দাম তেমন না বাড়িয়ে ভর্তুকি দিয়ে ঘাটতি সামলানোর চেষ্টা করছে সরকার।

নসরুল হামিদ বলেন, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা পাঁচগুণ বেড়েছে। ক্যাপটিভ (শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎ) ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিদ্যুৎসহ এখন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫১৪ মেগাওয়াট। আরও ১৩ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন। সারাদেশের ৯৯ দশমিক ৮৫ ভাগ এলাকা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে, এটিকে শতভাগ বলা যায়। ২১ মার্চ শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি আরও বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার রেকর্ডের মধ্যে ভর্তুকি বাড়িয়ে হলেও এখনই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সরকার চাচ্ছে, লোকসান করে হলেও সেখানে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে কতটুকু চলা যায়। এটা যদি খুব বেশি বড় হয়, তাহলে সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসতে পারে। এখনও সেই জায়গাতে আমরা যাইনি।

বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে শতভাগ এলাকা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে পেরেছে বাংলাদেশ। এক দশক আগে এটি ভাবা ছিল বিস্ময়কর ও অবিশ্বাস্য। দুর্গম পাহাড়-চরাঞ্চলেও পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ।

এ সময় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদুল আলম বলেন, ২০১৬ সালে কাজ শুরুর পর মাত্র ৩৭ মাসে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে এসেছে। তিনি দাবি করেন, বিশ্বে সবচেয়ে কম সময়ে নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্র এটি। সঞ্চালন লাইন শেষ না হওয়ায় পায়রার পুরো সক্ষমতা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ করে ঢাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছানো যাবে। এর আগে এপ্রিল থেকে বিকল্প পথে খুলনা ও যশোর এলাকা যুক্ত করে ৮৫ ভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

এফইআরবির চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী পরিচালক রিশান নসরুল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসাইন প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০