যৎসামান্য উত্থানে ভূমিকা ওষুধ ওরসায়ন খাতের

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া পুঁজিবাজারে লেনদেনে মন নেই বিনিয়োগকারীদের। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও রয়েছেন বিনিয়োগ বিমুখ। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মতো তারাও বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। ঘুরে ঘুরে ফিরে লেনদেন যা হচ্ছে তার সিংহভাগজুড়ে থাকছে ওধুষ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি। গতকালও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এদিন ডিএসইর সূচকের সামান্য উত্থান ঘটে। যাতে বড় ভূমিকা ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের।

করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘ ৬৬ দিন পুঁজিবাজার বন্ধ থাকার পর ৩১ মে তা আবার চালু হলে প্রথম দিনে এই খাতটির আধিপত্য দেখা যায়। কিন্তু তারপর টানা তিন কার্যদিবস খাতটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু অন্য খাতের শেয়ারে সুবিধা করতে না পারায় তারা আবারও ওষুধ খাতে ফিরে এসেছেন।

গতকালের লেনদেন চিত্রেও এই খাতটির আধিপত্য ছিল চোখে পড়ার মতো। সারাদিনই এই খাতের শেয়ারে ক্রেতার ভিড় দেখা যায়, যার জের ধরে দিন শেষে মোট লেনদেনের ৫৮ শতাংশই ছিল এ খাতের দখলে। এর ফলে দর বৃদ্ধির তালিকার পাল্লাও ভারী করে এই খাতের কোম্পানি। গতকাল ডিএসইতে মোট ২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বাড়তে দেখা যায়। এর মধ্যে ১০টিই ছিল ওষুধ খাতের কোম্পানি।

অন্যদিকে গতকাল ওষুধ খাতের পর আগ্রহের শীর্ষে ওঠে আসে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এই খাতের কোম্পানিতেও বিনিয়োগে মনোযোগী ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। দিন শেষে মোট লেনদেনের ১৩ শতাংশই ছিল এই খাতের অংশগ্রহণ। পরের অবস্থানে ছিল ব্যাংকিং খাত। লেনদেনে এই খাতের অবদান ছিল প্রায় ১২ শতাংশ। এছাড়া অন্যসব খাতের অবস্থা ছিল খুবই বিবর্ণ।

সাম্প্রতিক বাজারচিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ফ্লোর প্রাইসের কারণে পুঁজিবাজারের সূচক বৃদ্ধিতে বেগ পেতে হচ্ছে। ফ্লোর প্রাইসে আটকে যাওয়ার কারণে ক্রেতা-বিক্রেতার সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না। আর সমন্বয় না থাকার কারণে হচ্ছে না লেনদেন। ফলে লেনদেন কমে যাওয়ার পাশাপাশি সূচকও কাক্সিক্ষতভাবে ঊর্ধ্বমুখী হতে পারছে না। গতকালও এর ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক মাত্র ৪ পয়েন্ট বেড়ে দিন শেষে স্থির হয় ৩ হাজার ৯৬৭ পয়েন্টে।

অন্যদিকে গতকাল লেনদেন ছিল যৎসামান্য। ডিএসইতে গতকাল মোট লেদদেন হয় ৫৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট। গতকাল লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ৮৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। মোট লেনদেন হওয়া ২৭৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৩৫টির দরই অপরিবর্তিত ছিল। পক্ষান্তরে শেয়ারদর কমতে দেখা যায় ১৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের।

লেনদেন চিত্র দেখে বিনিয়োগকারীরা অনেকেই ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার কথা বলছেন। তাদের যুক্তি, বাজার তার স্বাভাবিক গতিতে চলুক। কিন্তু যারা এমনটি ভাবছেন এটা ভাবছেন না যে, ফ্লোর প্রাইস থাকার কারণে তারাই আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন। এখনই ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে তার বিনিয়োগকারীদের জন্য হিতে বিপরীতও হতে পারে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০