শেয়ার বিজ প্রতিনিধি, রংপুর; প্রতি বছরের মতো এবারও রংপুরে জমে উঠেছে হাঁড়িভাঙ্গা আমের বেচাকেনা। প্রিয়জনদের আম উপহার দিতে সকাল থেকে পাইকারি বাজারে ভিড় করছেন ক্রেতারা। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ মণ আম কেনাবেচা হচ্ছে এ পাইকারি বাজারে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১০ লাখ টাকা বলে জানা গেছে।
নগরীর আরকে রোড কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল-সংলগ্ন হাঁড়িভাঙ্গা আমের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতারা আম কেনাবেচা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বাজার সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৫০টি স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি আরও শতাধিক ভ্রাম্যমাণ আম বিক্রেতা পসরা সাজিয়ে বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। প্রতি মণ আম প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ১০০ থেকে শুরু করে দুই হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
আম ব্যবসায়ী মোকসুদুল রহমান বলেন, প্রায় ২০ দিন আগে এ পাইকারি বাজারের কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। এখানে আমের কেনাবেচা আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে বলে তিনি জানান। এখন প্রতিদিন ১০ লাখ টাকার বেশি আম কেনাবেচা হলেও জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে তা দ্বিগুণ হবে বলে তিনি আশাবাদী। এখন থেকে আম রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে পাঠানো হয়।
আম ব্যবসায়ী বাবুল ইসলাম বলেন, এ বছর দেড় লাখ টাকা দিয়ে ফাল্গুন মাসে ২৫০টি গাছের একটি বাগান কিনেছেন। প্রতিদিন তার ১০ থেকে ১৫ মণ আম বিক্রি হচ্ছে। প্রতি মণ আম প্রকারভেদে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা বিক্রি করছেন। গত বছর ২৫০ মণ আম বিক্রি করেছিলেন। সব খরচ বাদ দিয়ে তার লাভ হয়েছিল ৬০ হাজার টাকা।
আম ব্যবসায়ী হারেস উদ্দিন বলেন, তিনি প্রতিদিন পদাগঞ্জের বিভিন্ন আম বাগানে ঘুরে প্রতি মণ আম এক হাজার ৬০০ থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকা দরে কিনে এনে তা ২০০ থেকে ৪০০ টাকা লাভ ধরে বিক্রি করেন।
আম ক্রেতা শাহরিয়ার হক বলেন, আমটি বেশ সুস্বাদু। তাছাড়া হাঁড়িভাঙ্গা আম রংপুর ছাড়া কোথাও পাওয়া যায় না। তাই তিনি প্রতি বছর ঢাকার আত্মীয়স্বজনের কাছে হাঁড়িভাঙ্গা আম পাঠান। তিনি পাইকারি বাজার থেকে আম কিনতে এসেছেন, কারণ এখানকার আম সস্তা এবং অনেক ফ্রেশ। তিনি দুই মণ আম দুই হাজার ২০০ টাকা দরে চার হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন। পরে ২০ কেজি করে বাঁশের তৈরি খাঁচায় প্যাকেট করেছেন। প্রতিটি খাঁচা কিনতে খরচ হয়েছে ৮০ টাকা।
এদিকে প্যাকেজিংয়ের সুবিধায় পাইকারি বাজারে চার থেকে পাঁচটি প্যাকেজিংয়ের দোকান গড়ে উঠেছে। দোকানগুলোয় প্লাস্টিকের ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা এবং বাঁশের খাঁচা ৫০ থেকে ২০০ টাকায়।
রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর (২০১৬-১৭ অর্থবছরে) এক হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে হাঁড়িভাঙ্গার চাষ হয়েছে, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৮ হাজার ১০০ টন।