নিজস্ব প্রতিবেদক: রডের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট সম্পূর্ণ অব্যাহতির দাবি জানিয়েছে ইস্পাত শিল্প ব্যবসায়ীদের কয়েকটি সংগঠন। এদের মধ্যে বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশন, স্টিল মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশন গতকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে রডের ওপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
এদিকে একই দাবিতে গতকাল দোকান বন্ধ রেখে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। দুপুরে পুরান ঢাকায় সংগঠনটির কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লৌহ ব্যবসায়ীদের আরও কিছু অঙ্গসংগঠনও উপস্থিত ছিল।
রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বারের মিলনায়তনে তিন সংগঠনের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অটো রি-রোলিং অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন বলেন, ২০০৯ সাল থেকে সরকার ইস্পাত খাতকে উৎসাহ দিয়ে আসছে। তবে একটি বাজেটে এবার সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ২০০৯ সালে রডের বার্ষিক ব্যবহার ছিল ১৮ লাখ টন। বর্তমানে সেটি বেড়ে ৫০ লাখ টন হয়েছে। তারপরও পাশের দেশগুলোর চেয়ে আমাদের মাথাপিছু ইস্পাতের ব্যবহার এখনও সর্বনি¤œ।
তিনি বলেন, ‘ভ্যাটের কারণে রডের দাম প্রতি টনে সাড়ে সাত হাজার টাকা বেড়ে যদি ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা হয়ে যায়, তবে তা মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। যেহেতু দেশে ব্যবহƒত মোট রডের প্রায় ৩০ শতাংশই বর্তমানে যায় গ্রামগঞ্জে, সেখানে রডের দাম বাড়লে ব্যবহার কমে যাবে। এতে গ্রাম-বাংলার উন্নয়ন থমকে যাবে। সরকারি স্থাপনা নির্মাণ ব্যয় বাড়বে।’ মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘দেশে একটি কথা প্রচলিত আছে যে, ভাবিয়া করিও কাজ। তবে ইস্পাত খাতে যে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে, সেটি ভেবে করা হয়নি। সব রোগের চিকিৎসা যেমন প্যারাসিটামল দিয়ে হয় না, তেমনি গণহারে ভ্যাট আরোপের ফল ভালো হবে না।’
তিনি বলেন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ভ্যাট আরোপের কারণে হয়রানি বাড়বে। ভ্যাট মেনে নিতে ব্যবসায়ীরা এখনও প্রস্তুত নয়। এ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি আমাদের সব সংগঠনের।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, স্টিল মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলুর রহমান, অটো-রি রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলসের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ মাসাদুল আলম প্রমুখ।
এদিকে সকালে পুরান ঢাকায় অপর মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে এফবিসিসিআই’র সাবেক সহসভাপতি হেলাল উদ্দীন বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও কাঁচামালের ওপর ভ্যাট দিতে হয় না। শিল্প স্বার্থ সংরক্ষণ করে শুধু ফিনিশ্ড প্রডাক্টের ওপর ভ্যাট প্রযোজ্য। কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পেলে দেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। এর বিরূপ প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতির ওপর। বেকার হয়ে যাবে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী।’ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প রক্ষায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করে প্যাকেজ ভ্যাট চালুর দাবি জানান তিনি।