নিজস্ব প্রতিবেদক: ডলার সংকটের এ সময়ে পণ্য রপ্তানি বাড়ানো জরুরি; তবে রপ্তানি সেভাবে বাড়ছে না। এমন সময়ে আবারও সব ধরনের রপ্তানিতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা কমাল সরকার। এতে পণ্য রপ্তানিতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারকরা। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে সব পণ্যে নগদ সহায়তা কমানো হয়েছিল।
গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনে নগদ সহায়তা কমানোর কারণ উল্লেখ করা হয়নি। এর আগে নগদ সহায়তা কমিয়ে গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটতে যাচ্ছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ হলে কোনো ধরনের নগদ সহায়তা দেয়া যাবে না। উত্তরণের পর সম্পূর্ণ নগদ সহায়তা একবারে প্রত্যাহার করলে রপ্তানি খাত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে। ফলে বিভিন্ন খাতে নগদ সহায়তার হার অল্প করে কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে জাহাজীকৃত রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা হবে দেড় শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারিতে যা ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়। ইউরো অঞ্চলে বস্ত্রখাতের রপ্তানিকারকদের প্রণোদনার হার দেড় শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তাও আরও কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে এই হার ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হয়। নিট, ওভেন ও সোয়েটারসহ তৈরি পোশাক খাতের সব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে অতিরিক্ত নগদ সহায়তা হবে ৩ শতাংশ। আগে যা ৪ শতাংশ ছিল। বস্ত্র খাতে নতুন পণ্য বা নতুন বাজার সম্প্রসারণ সুবিধা আবার কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে যা ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয় ৩ শতাংশ। তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ নগদ সহায়তা দেয়া হবে শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারিতে যা ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়।
চামড়ায় ভর্তুকি আরও কমিয়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ভর্তুকি ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছিল। সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে অবস্থিত কারখানা এবং সাভারের বাইরে নিজস্ব ইটিপি রয়েছে এরকম কারখানা উৎপাদিত ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদারে রপ্তানি ভর্তুকি দেয় সরকার। এছাড়া অন্যান্য সব খাতে ভর্তুকি কমানো হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারির নির্দেশনার মাধ্যমে বস্ত্র খাতের পাঁচটি এইচএস কোডের আওতায় রপ্তানি হওয়া পণ্যে কোনো নগদ সহায়তা দেয়া হবে না বলে জানানো হয়। এইচএস কোডগুলো হলোÑ৬১০৫, ৬১০৭, ৬১০৯, ৬১১০ এবং ৬২০৩। এসব কোডের আওতায় পুরুষদের শার্ট, টি-শার্ট, স্যুট, জ্যাকেট, সোয়েটার, পুরুষদের অন্তর্বাস, পায়জামা, টপস, নাইটশার্ট, পুলওভার, সোয়েটশার্ট, কোমর কোটসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয়। বিজিএমইএর হিসাবে বস্ত্র খাতের মোট রপ্তানির ৫৬ শতাংশের মতো হয়ে থাকে। এ নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিক্রিয়ার পর ফেব্রুয়ারিতে অপর একটি সার্কুলার জারি করে এসব ক্ষেত্রে হার কমিয়ে নগদ সহায়তার আওতায় রাখা হয়।