চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস

রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচারের পাঁয়তারা দুই প্রতিষ্ঠানের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচারের অভিযোগে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের দুই রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের দুটি চালান জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। একই সঙ্গে ওই চালানে প্রতিষ্ঠান দুটি কালোটাকা সাদা করা ও সরকারের কাছ থেকে অবৈধ উপায়ে নগদ প্রণোদনা গ্রহণেরও অপচেষ্টা করেছে বলে জানায় কাস্টম কর্তৃপক্ষ। তাই পতেঙ্গার বেসরকারি ইস্টার্ন লজিস্টিকস ডিপোতে থাকা খাদ্যপণ্যের কনটেইনার দুটি জব্দ করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন ও রিসার্চ (এআইআর) শাখা।

কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার মতিঝিলের ২৮/১/সি টয়েনবি সার্কুলার রোডের ঠিকানার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের ছোট কৃষ্ণদি মালয়েশিয়ায় এক লাখ তিন হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের ফুড স্টাফের দুটি পণ্য চালান রপ্তানির লক্ষ্যে চট্টগ্রামের বন্দর ৮১৭/১ গোসাইলডাঙ্গার জাফর ম্যানশনের ঠিকানার সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আর ইসলাম এজেন্সিকে মনোনয়ন দেয়। সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে গত ২১ ডিসেম্বর বিল অব এক্সপোর্ট (নম্বর-সি-১৭৭৬৮৮৮) এবং ১৮ ডিসেম্বর (সি-১৭৬১৯৭৭) দাখিল করেন।

তারপর উত্তর পতেঙ্গার ইস্টার্ন লজিস্টিকস ডিপোতে ওই চালানের বিপরীতে ২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে দুই কনটেইনারে পণ্য বোঝাই করা হয়, যা জাহাজে তোলার অপেক্ষায় ছিল বলে জানা যায়। একই সঙ্গে প্রতি কনটেইনারে প্রায় ১১ টন পণ্য থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে সমপরিমাণ পণ্য ছিল না। বিষয়টি কাস্টম কমিশনার জানতে পেরে কনটেইনার দুটি খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রদান করেন। তারপর কাস্টম হাউসের এআইআর শাখা এবং জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা, সংশ্লিষ্ট ডিপো ও সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কনটেইনারের সিল কেটে পণ্য পরীক্ষা করলে কনটেইনারের সামনের দিকে সুসজ্জিত মুড়ি, ড্রাই কেক টোস্টের কার্টন পাওয়া যায়। কিন্তু কনটেইনারে পেছনের দিকে দেখা যায় প্রায় পুরো কনটেইনার ফাঁকা এবং প্রতি কনটেইনারে প্রায় ১১ টন পণ্য থাকার কথা থাকলেও পাওয়া যায় আধা টন পণ্য।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম শেয়ার বিজকে জানান, ‘ডিপো কর্তৃপক্ষ ঘোষণা অনুযায়ী পণ্য বুঝে নিলেও কম পণ্য থাকার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এক্ষেত্রে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে কালোটাকা পাচার করে রপ্তানির নামে টাকা সাদা করার অপচেষ্টা করা হয়েছে মর্মে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাছাড়া রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করতে খাদ্যসামগ্রী রপ্তানির ক্ষেত্রে নগদ প্রণোদনা দেয় বাংলাদেশ সরকার। মানি লন্ডারিং, রপ্তানির আড়ালে কালোটাকা সাদা করা, অবৈধভাবে সরকারি প্রণোদনা গ্রহণের অপচেষ্টাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করেছে এ চোরাচালান চক্রটি। এ ঘটনায় কাস্টমস আইন অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে এবং দ্রুত অনুসন্ধান শুরু করবে কাস্টম হাউসের এন্টি মানি লন্ডারিং ইউনিট।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০