রপ্তানি-সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে ব্যাংকগুলোকে চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রপ্তানির আয় বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে দেশে প্রত্যাবসন হচ্ছে কিনা, তা জানতে ব্যাংকগুলোর কাছে রপ্তানি-সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ২০২২ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর সময়ের মধ্যকার তথ্য চাওয়া হয়। গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি সব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক শেয়ার বিজকে বলেন, রপ্তানির তথ্য চাওয়া এটা দৈনন্দিন প্রক্রিয়া। সে প্রক্রিয়া হিসেবে চিঠি দেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত আমদানি-রপ্তানি বিষয়ে তদারকি করছে।

সূত্র জানায়, পণ্য রপ্তানির পর ১২০ দিনের মধ্যে রপ্তানি মূল্য দেশে প্রত্যাবাসন করতে হয়। কিন্ত দেখা যায় অনেক সময় এ আয় আসতে ১২০ দিনের বেশি সময় নেয়। এখন দেশে ডলার সংকট চলছে। এ সংকটে যথাসময়ে রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন না হলে, সংকট আরও গভীর হবে। তাই ব্যাংকগুলোর রপ্তানি আয় যথাসময়ে প্রত্যাবাসন হচ্ছে কিনা, তার অংশ হিসেবে এ তথ্য চাওয়া হয়েছে।

এর আগে গত বছরের মে মাসে রপ্তানি বিল নগদায়নে দেরি করা যাবে না বলে এক নির্দেশনা দেয়। রপ্তানি বিল পাওয়ার পর দিনই এ অর্থ নগদায়ন করতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের দায় সমন্বয়ে যে অর্থ লাগবে, তা আলাদাভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। আবশ্যিকভাবে রপ্তানিকারক ব্যাংকের মাধ্যমেই রপ্তানি বিল ভাঙাতে হবে।

ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রত্যাবাসিত রপ্তানি আয় থেকে ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের মাধ্যমে স্থানীয় মূল্য সংযোজন অংশ সিঙ্গেল পুলে সংরক্ষণ করতে হবে। সিঙ্গেল পুল বা খসড়া হিসাব ধরে আলাদাভাবে সংরক্ষণের আগেই স্থানীয় মূল্য সংযোজন অংশ নগদায়ন করতে হবে। ব্যাংকের ‘নস্ট্রো’ হিসাবে রপ্তানি আয় জমা হওয়ার এক দিনের মধ্যেই এ কাজ করতে বলা হয়েছে। অপর এক সার্কুলারে অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসনে করণীয় বিষয়ে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন কিংবা অন্য ব্যাংক বা অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের মাধ্যমে রপ্তানি বিল বৈদেশিক মুদ্রায় ডিসকাউন্টিং করলেও ওই বৈদেশিক মুদ্রা রপ্তানিকারকের ব্যাংকে স্থানান্তর করতে হবে। বায়িং এজেন্টের মাধ্যমে রপ্তানি বিল প্রত্যাবাসনেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত মার্চের পর থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতে সংকট আরও প্রকট হয়। পরে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেয়া হয় ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বাফেদার ওপর। এরপর দুই সংগঠনের নেতারা বিভিন্ন লেনদেনে ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ শুরু করেন। এখন রপ্তানিকারকরা প্রতি ডলারের বিপরীতে পান ১০২ টাকা।

সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বর মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে রেকর্ড পরিমাণে আয় করেছে বাংলাদেশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ডিসেম্বরে বাংলাদেশ থেকে ৫৩৬ কোটি ৫১ লাখ ৯০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে; যা এক মাসের সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়। যদিও চলতি বছরের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো রপ্তানি আয় ছাড়িয়েছিল ৫০০ কোটি ডলার।

এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ৪৯০ কোটি ৭৬ লাখ ৮০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ। সে হিসাবে ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় আগের বছরের একই মাসের চেয়ে বেড়েছে ৯.৩৩ শতাংশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০