Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 3:29 pm

রবির দরপতনে সূচক কমল ৮৪ পয়েন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশের পুঁজিবাজারে ক্রমাগত দরপতন অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি রবি আজিয়াটার ফ্লোর প্রাইস উঠে যায়। কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস উঠে যাওয়ার প্রথম দিনেই সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছে। এদিন রবির দরপতনেই সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট। আর সামগ্রিকভাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৮৪ পয়েন্ট। এতে সূচক ৩৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থান ৫ হাজার ৮১৪ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এছাড়া গতকাল প্রধান মূল্যসূচক কমায় প্রভাব ছিল বহুজাতিক কোম্পানি বিএটি বাংলাদেশ, বীকন ফার্মা, রেনাটা এবং গ্রামীণফোন। এই চার প্রতিষ্ঠানের প্রভাবে সূচক কমেছে প্রায় ১৫ পয়েন্ট।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস উঠে যায়। এর ফলে এদিন রবি আজিয়াটার শেয়ারের সর্বোচ্চ দরপতন হয়। ফ্লোর প্রাইস উঠে যাওয়ায় গতকাল ডিএসইতে রবির প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ৩ টাকা বা ১০ শতাংশ কমে ২৭ টাকায় নেমে আসে। সর্বোচ্চ দরপতনের

দিনে কোম্পানিটির প্রায় ৭ লাখ ৬০ হাজার শেয়ারের হাতবদল হয়। এদিন লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২ কোটি টাকা।

গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসই’র প্রধান সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে ৫ মিনিটের মধ্যে দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান এবং লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম কমার তালিকা বড় হয়। ফলে রীতিমতো ধস দিয়ে পুঁজিবাজারে লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৪১টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ৩১৯টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স ৮৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮১৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে ২০২১ সালের ২৩ মে’র পর সূচকটি সর্বনিম্ন অবস্থানে অবস্থান করছে। ২০২১ সালের ২৩ মে ডিএসই’র প্রধান সূচক ছিল ৫ হাজার ৭৮৭ পয়েন্ট। এরপর সূচকটি আর এত নিচে নামেনি।

অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সব কয়টি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৬৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৮৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২১ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪০ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফু-ওয়াং সিরামিকের ১৬ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গোল্ডেন সন।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑসেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, রেনাটা লিমিটেড, বেস্ট হোল্ডিংস, এসএস স্টিল, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এবং লাভেলো আইসক্রিম।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৭৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭০টির এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।