নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রবি আজিয়াটা লিমিটেড গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৫৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছে ৮২ কোটি ৩৭ লাখ পাঁচ হাজার ৪০০ টাকার শেয়ার। সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪১১ কোটি ৮৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ বা চার টাকা ৩০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৪৭ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৪৭ টাকা ৬০ পয়সায় ওঠানামা করে।
সম্প্রতি পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবির। এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রবিকে পুঁজিবাজার থেকে ৫২৩ কোটি টাকা তোলার অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরপর ১৭ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর বিনিয়োগকারীরা রবির জন্য আবেদন করেন এবং গত ১০ ডিসেম্বর লটারি হয়। ২০ ডিসেম্বর বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্টে শেয়ার পাঠানো হয়।
রবি আইপিও থেকে মোট ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা তহবিল সংগ্রহ করতে চেয়েছিল। সেজন্য ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ার ছাড়ে তারা।
এর মধ্যে রবি কর্মীদের কাছে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার বিক্রি করে ১৩৬ কোটি পাঁচ লাখ ৯ হাজার ৩৪০ টাকা তুলেছে। বাকি ৩৮৭ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার টাকার মধ্যে ১৫৫ কোটি ৯৬ লাখ ৯ হাজার ৬০০ টাকা বরাদ্দ ছিল যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য। বাকিটা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য।
আইপিওর ৫১৫ কোটি ৭৭ লাখ ২৩ হাজার ৫৭৪ টাকা দিয়ে নেটওয়ার্ক পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে রবির। আর আট কোটি দুই লাখ ৯ হাজার ৭৬৬ টাকা আইপিও বাবদ খরচ হবে।
প্রসঙ্গত, সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়ম অনুসারে লেনদেনের প্রথম দিন থেকেই সার্কিট ব্রেকার চালু রয়েছে রবির শেয়ারে। তাই লেনদেন শুরুর প্রথম দিনে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারের দাম আইপিওর অফার মূল্যের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারবে। একইভাবে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারবে, এর বেশি নয়।
এদিকে বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, লেনদেনের প্রথম ৩০ দিন কোম্পানিটির শেয়ার কিনতে মার্জিন ঋণ না দিতে স্টক ব্রোকার্স ও মার্চেন্ট ব্যাংকার্সদের নিষেধাজ্ঞা জানানো হয়েছে।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জিবিবি পাওয়ার লিমিটেড। ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ১৪ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ৪০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৭৩ কোটি ৯১ লাখ ৬৭ হাজার টাকার শেয়ার।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস লিমিটেড। ‘বি’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ২৫ কোটি ৯০ লাখ ২৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১২৯ কোটি ৫১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার শেয়ার।
এর পরের অবস্থানে থাকা ‘এ’ ক্যাটেগরির বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ১৪ কোটি ৩ লাখ ৭৭ হাজার ২০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৭০ কোটি ১৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকার শেয়ার।
এর পরের অবস্থানে থাকা ‘এন’ ক্যাটেগরির ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন সাত কোটি ৮৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৩৯ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার। আর ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা ‘এ’ ক্যাটেগরির ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ২৬ কোটি ৩৪ লাখ ১০ হাজার ৪০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১৩১ কোটি ৭০ লাখ ৫২ হাজার টাকার শেয়ার।
সপ্তম অবস্থানে থাকা ‘এ’ ক্যাটেগরির লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ৮৭ কোটি ৩৮ লাখ ৫৯ হাজার ২০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৪৩৬ কোটি ৯২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার শেয়ার। এর পরের অবস্থানে থাকা ‘এ’ ক্যাটেগরির এসএস স্টিল লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ২০ কোটি ৮০ লাখ ৫৮ হাজার ২০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১০৪ কোটি শূন্য দুই লাখ ৯১ হাজার টাকার শেয়ার। পরের অবস্থানে থাকা ‘এ’ ক্যাটেগরির সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ১৭ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৮৬ কোটি ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকার শেয়ার। তালিকার সর্বশেষ অবস্থানে থাকা থাকা ‘এ’ ক্যাটেগরির পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ৩০ কোটি ৯৭ লাখ ৩৫ হাজার ৪০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১৫৪ কোটি ৮৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকার শেয়ার।