নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রবি আজিয়াটা লিমিটেড গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৯৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছে পাঁচ কোটি ৪৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকার শেয়ার। সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২১ কোটি ৯৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ বা দুই টাকা ৭০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ২৯ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ২৯ টাকা ৮০ পয়সা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ২৯ টাকা ৮০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২৯ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠানামা করে।
সম্প্রতি পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবির। এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রবিকে পুঁজিবাজার থেকে ৫২৩ কোটি টাকা তোলার অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরপর ১৭ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর বিনিয়োগকারীরা রবির জন্য আবেদন করেন এবং গত ১০ ডিসেম্বর লটারি হয়। ২০ ডিসেম্বর বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্টে শেয়ার পাঠানো হয়।
রবি আইপিও থেকে মোট ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা তহবিল সংগ্রহ করতে চেয়েছিল। সেজন্য ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ার ছাড়ে তারা।
এর মধ্যে রবি কর্মীদের কাছে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার বিক্রি করে ১৩৬ কোটি পাঁচ লাখ ৯ হাজার ৩৪০ টাকা তুলেছে। বাকি ৩৮৭ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার টাকার মধ্যে ১৫৫ কোটি ৯৬ লাখ ৯ হাজার ৬০০ টাকা বরাদ্দ ছিল যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য। বাকিটা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য।
আইপিওর ৫১৫ কোটি ৭৭ লাখ ২৩ হাজার ৫৭৪ টাকা দিয়ে নেটওয়ার্ক পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে রবির। আর আট কোটি দুই লাখ ৯ হাজার ৭৬৬ টাকা আইপিও বাবদ খরচ হবে।
প্রসঙ্গত, সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়ম অনুসারে লেনদেনের প্রথম দিন থেকেই সার্কিট ব্রেকার চালু রয়েছে রবির শেয়ারে। তাই লেনদেন শুরুর প্রথম দিনে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারের দাম আইপিওর অফার মূল্যের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারবে। একইভাবে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারবে, এর বেশি নয়।
এদিকে বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, লেনদেনের প্রথম ৩০ দিন কোম্পানিটির শেয়ার কিনতে মার্জিন ঋণ না দিতে স্টক ব্রোকার্স ও মার্চেন্ট ব্যাংকার্সদের নিষেধাজ্ঞা জানানো হয়েছে।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। ‘এন’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৪৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ১২ লাখ ৫৬ হাজার ২৫০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৫০ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে খান বাহাদুর পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ‘বি’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩২ দশমিক ১৪ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন দুই কোটি ৯১ লাখ ৬০ হাজার ২৫০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৬৬ লাখ ৪১ হাজার টাকার শেয়ার।
এর পরের অবস্থানে থাকা ‘এ’ ক্যাটেগরির লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ৩০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ৯৬ হাজার ৭৫০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২১৩ কোটি ৫১ লাখ ৮৭ হাজার টাকার শেয়ার। আর পঞ্চম অবস্থানে থাকা ‘এ’ ক্যাটেগরির ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ছয় কোটি ৬৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৫৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকার শেয়ার।
ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা ‘বি’ ক্যাটেগরির প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ছয় কোটি ৮৫ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৪২ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার। সপ্তম অবস্থানে থাকা ‘বি’ ক্যাটেগরির ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন এক কোটি ৩২ লাখ পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে পাঁচ কোটি ২৮ লাখ ২৩ হাজার টাকার শেয়ার।
এর পরের অবস্থানে থাকা ‘এ’ ক্যাটেগরির বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন সাত কোটি ৬৫ লাখ ২২ হাজার ৭৫০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ৬০ লাখ ৯১ হাজার টাকার শেয়ার। পরের অবস্থানে থাকা ‘বি’ ক্যাটেগরির বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২৩ দশমিক ১১ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ১২৭ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার ৫০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৫১১ কোটি ৫৫ লাখ ৬২ হাজার টাকার শেয়ার। তালিকার সর্বশেষ অবস্থানে থাকা থাকা ‘এ’ ক্যাটেগরির দেশ গার্মেন্ট লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২২ দশমিক ২২ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন এক কোটি ২০ লাখ ৭৮ হাজার ৭৫০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে চার কোটি ৮৩ লাখ ১৫ হাজার টাকার শেয়ার।