শেয়ার বিজ প্রতিনিধি, নরসিংদী: আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে নরসিংদীর বাজারগুলোতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে ব্যাপকভাবে। এতে বিপাকে পড়ছেন নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয় ক্রেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট রমজানের বেশ আগে থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে। অবশ্য ব্যবসায়ীরা তা অস্বীকার করে বলেন, পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় তারাও দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন।
সরেজমিনে গত কয়েকদিন নরসিংদীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, চাল-ডাল, চিনি, ব্রয়লার, মাছ, ভোজ্যতেল, ছোলা ও পেঁয়াজের দামসহ বেশ কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আগের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে। আর এ প্রভাব পড়েছে নরসিংদীর কাঁচাবাজারেও। গত কয়েক দিনের তুলনায় ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বেড়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রমজানকে সামনে রেখে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি নিত্যপণ্যের বাজারে মাছের দামও বেশি।
বেশিরভাগ ক্রেতা অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে মুরগি ও মাছ কিনছেন। এতে করেও বাজারে মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে যায় বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঝড় ও বৃষ্টিবাদলের কারণে সরবরাহের ঘাটতি হয়েছে। সে কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম একটু বাড়তি। ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি পাকিস্তানি মুরগি নামে পরিচিতি মুরগির দামও বেড়েছে। মাঝারি সাইজের পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা জোড়া। গত সপ্তাহে এ মুরগির জোড়া ছিল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। এছাড়া লেয়ার ও ককটেল মুরগির দামও বেড়েছে বলে জানা গেছে।
তবে রমজান সামনে রেখে দাম বাড়াতে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি রয়েছে বলে মনে করছেন খুচরা বিক্রেতারা। তাদের মতে, পাইকারি বাজারে মুরগির দাম বাড়তি।
নরসিংদী বড়বাজারের কয়েকজন মুরগি বিক্রেতা শেয়ার বিজকে বলেন, দুই দিন আগেও আমরা প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেছি ১৪০ টাকায়। আজ (গতকাল) সেটা ১৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। মুরগির পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
এদিকে মাছের বাজারেও সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। প্রতি জোড়া মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকায়। এছাড়া রুই ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় এবং চিংড়ি ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বড়বাজারের সবজি ক্রেতা মিজান জানান, কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়। এছাড়া বাজারে পেঁপে ও বেগুনের দাম সবচেয়ে বেশি বাড়তে দেখা গেছে।
নরসিংদী বটতলা কাঁচাবাজারে প্রতিকেজি পেঁপে ৫০ ও বেগুন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান সবজি ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া। এছাড়া কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। পেঁপের কেজি ২০ থেকে ৩৫ টাকা, টমেটো ৮০ থেকে ৯৫, কাঁচামরিচ ২০০, গাজর ৪৫, শসা ৩৫ থেকে ৪০ ও করলা ৬০ থেকে ৭৫ টাকা বিক্রি করতে দেখা যায়।
ভারত থেকে আমদানি করা বড় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে। আদা ৯০ থেকে ১০০, মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ ও রসুন ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি ছোলা জাত ও মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। তবে প্যাকেটজাত চিনি ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা পর্যায়ে।
মুল্য বৃদ্ধির প্রসঙ্গে নরসিংদীর একজন কৃষিবিদ জানান, নরসিংদীতে কায়েমি স্বার্থবাদী সিন্ডিকেটের কালো হাতের ইশারায় দ্রব্যমূল্যের দাম অস্বাভাবিক পর্যায়ে রয়ে গেছে। সরকারের সদিচ্ছাই পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, হলুদ ও সবজির মূল্য স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে পারে।