নিজস্ব প্রতিবেদক: রমজান মাসে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত অফিসগুলোয় কার্যক্রম শুরু হবে সকাল ৯টায় এবং শেষ হবে বেলা সাড়ে ৩টায়। গতকাল সোমবার রোজার মাসে অফিস-আদালতের এ সময়সূচি নির্ধারণ করে দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সচিবালয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, এবার রোজায় সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অফিসের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে দুপুর সোয়া ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত থাকবে জোহরের নামাজের বিরতি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান রোজার সময় ৯টা-সাড়ে ৩টা সূচিতে চলবে। তবে সুপ্রিমকোর্ট, ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী অফিসসূচি ঠিক করে নেবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৭ মে রোজা শুরু হতে পারে। আর রোজার ঈদে সরকারি ছুটির সম্ভাব্য তারিখ রাখা হয়েছে ১৫ থেকে ১৭ জুন।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শফিউল আলম জানান, ‘যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। খসড়া আইনে নতুন একটি বিধান যুক্ত করা হয়েছে। যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলা করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
শফিউল আলম জানান, ১৯৮০ সালে দ্য ডাউরি প্রহিবিশন অর্ডিন্যান্স করে সরকার। ১৯৮২, ১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে এর সংশোধন করা হয়। ওই অর্ডিন্যান্সকে হালনাগাদ করতে নতুন করে আইন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আগের যে প্রভিশনগুলো ছিল, সেগুলো মোটামুটি একই রকম আছে। সামান্য একটু পরিবর্তন করে এটাকে আনা হয়েছে। সাজা আগের মতো রাখা হলেও জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।’
যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলার জন্য আইনে এতদিন কোনো জেল বা জরিমানার বিধান ছিল না। আগের অর্ডিন্যান্সে যৌতুক দাবি, প্রদান ও গ্রহণের শাস্তি ছিল এক থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা। এসব অপরাধের জন্য প্রস্তাবিত আইনে দণ্ড আগের মতো রাখা হলেও জরিমানা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। জেল বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডও দেওয়া যাবে।
কোটা বাতিল-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কোটা-সংক্রান্ত বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো দিকনির্দেশনা পাননি এবং এ-সংক্রান্ত কোনো অগ্রগতি নেই। তবে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে যে কমিটি গঠিত হবে, সে কমিটিতে কে কে থাকবেন তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঠিক করবে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হবে বলে আশা করছেন তিনি।
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কার দাবিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের লাগাতার আন্দোলন এবং এ আন্দোলনের এক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনে হামলা ও আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি অ্যাকশনসহ বিভিন্ন কারণে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারের প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। এরপর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।
