নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন রমজান সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরবরাহ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির ৪২তম সভায় সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দীন এ অনুরোধ করেন।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘রোজা সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’ এতে সাধারণ ভোক্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানিতে মোট প্রাক্কলিত আমদানি শুল্কের বিপরীতে আনুপাতিক হারে আমদানি শুল্ক রেয়াত দেয়ার জন্য প্রস্তাব দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে ব্যবসায়ী সংগঠন ও এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্কের বিভিন্ন প্রস্তাবের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোর জন্য উদ্যোগ নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এফবিসিসিআই নিন্ম আয় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ব্যবহার্য পণ্য, সাধারণ পণ্য পরিবহন, নিত্যপ্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রিসাইক্লিং, টেন্ডার-বহির্ভূত সরাসরি পণ্য মেরামত বা সার্ভিসিং খাত প্রভৃতি ক্ষেত্রে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতির সুপারিশ করে।
এছাড়া ক্ষুদ্র-মাঝারি ও নতুন শিল্প উদ্যোক্তাসহ সব শ্রেণির জন্য বিনিয়োগবান্ধব কর কাঠামোর সুপারিশ করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনটি।
এছাড়া ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার ন্যূনতম কর তিন লাখ থেকে বাড়িয়ে চার লাখ টাকা করা, কোম্পানি কর ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর ছাড়ের প্রস্তাব দেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
তিনি আয়কর ও মূসকের আওতা বাড়ানো, সব রপ্তানি খাতকে সমান সুবিধা দেয়া, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি জোরদার করা, টার্নওভার কর ফিরিয়ে আনা এবং ভ্যাট আইন সংশোধন করে বাস্তবসম্মত করার প্রস্তাব করেন। এছাড়া ব্যাংকঋণ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত খেলাপি না করার সুযোগ চান তিনি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আগামী অর্থবছরের বাজেটের মূল থিম হচ্ছে সবার জন্য সমান সুযোগ। ব্যবসায়ীরাও ঠকবে না আবার সরকারও জিতবে। সরকার সব ক্ষেত্রে বেশি নিল, ব্যবসায়ীরা কিছু পেল না এ অভিযোগ সরকার শুনতে চায় না। গত ১৩ বছরে রাজস্ব আটগুণ বেড়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের অবদান রয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের এটাও মনে রাখতে হবে, আগামীতেও কর পরিশোধ করতে হবে।’