রমজানে বাজার অস্থিতিশীল হবে না, আশ্বাস ব্যবসায়ীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী, আড়তদার এবং মিল মালিকদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। গতকাল রোববার এফবিসিসিআই আয়োজিত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মজুদ, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতিবিষয়ক মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।

সংগঠনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে কেউ যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সচেতন থাকতে হবে। পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে খুচরা, পাইকারি বাজার ও আড়ত পর্যায়ে পণ্য কেনাবেচায় রশিদ (ইনভয়েস) দেয়ার তাগিদ দেন তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ব্যবসা করতে হবে। বিগত সময়ে ব্যবসায়ীদের প্রতি সাধারণ মানুষের যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে তা দূর করতে হবে।

গত বছরের ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রমজানের নিত্যপণ্য আমদানিতে এলসি সহজীকরণের জন্য সে সময় এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয় বলে জানান তিনি।

জসিম উদ্দিন বলেন, রমজানে বাজার স্বাভাবিক রাখতে এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে ৪৬ সদস্যবিশিষ্ট বাজার মনিটরিং কমিটি কাজ করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে কিনা, তা তদারকি করছেন কমিটির সদস্যরা। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্ব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন সভাপতি।

এ সময় চাল, গম প্রভৃতি পণ্য উৎপাদন করে সরবরাহ শৃঙ্খল স্বাভাবিক রাখার জন্য কৃষক ও খামারিদের ধন্যবাদ জানান তিনি। এছাড়া বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীদেরও ধন্যবাদ জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, সারাবিশ্বে যেখানে উৎসব পার্বণ এলে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম কমিয়ে দেন, সেখানে আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেন। উৎসবে পণ্যের দাম বাড়ানোর সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, বাজারে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হলে ব্যবসায়ীদের অসাধু তকমা দেয়া হয়, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি বন্ধে বিক্রয়ের পাকা রশিদ বা ভাউচার থাকা আবশ্যক বলে জানান তিনি।

দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে বেসরকারি খাতের বিরাট ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান। তিনি বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের আমদানি, মজুত প্রভৃতি নিয়ে বাজারে যে অভিযান আমরা করি, সেগুলো করতে চাই না আমরা। ব্যবসায়ীরাই নিজেরা সমাধান করতে পারে এগুলো।

সভায় আসন্ন রমজানে বাজারে ভোজ্যতেলের কোনো সংকট হবে না বলে জানান পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা।

তেল ছাড়াও আসন্ন রোজা ঘিরে বাজারে চিনি, ডাল, ছোলা, খেজুরসহ অন্যান্য পণ্যের সংকট সৃষ্টি হবে না বলে আশ্বাস দেয় মিলমালিক, পাইকারসহ বাজার সমিতিগুলো।

মতবিনিময় সভায় মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. বশির উদ্দিন জানান, সরবরাহ ঠিক থাকলে বাজারে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থাকবে।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেনÑএফবিসিসিআই’র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, হাবীব উল্লাহ ডন, পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, মো. রেজাউল করিম রেজনু, এমজিআর নাসির মজুমদার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান (টিটো), আবু মোতালেব, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, মো. আমজাদ হোসেন, আক্কাস মাহমুদ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ অয়েল মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা, মেঘনা গ্রুপের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার তসলিম শাহরিয়ার, বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি আবুল হাশেম প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০