নিজস্ব প্রতিবেদক: এক দশকেও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে বিচারের দাবিতে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) চত্বরে সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ আহ্বান জানান তারা।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, ‘এই দিন এলে আমরা তাদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলি। আবার ভুলে যাই। ১০ বছরেও বিচার পেলাম না। এই মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব অনেক ক্লু-লেস হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের কারণ কেন উদঘাটন করতে পারছে না। এ বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। নির্দেশনা দিলে প্রশাসন বাইরে যেতে পারবে না। আদালত যদি এ ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেয় তাহলে প্রশাসন তা করতে বাধ্য হবে। আমরা আগামী বছর আর এটা নিয়ে দাঁড়াতে চাই না।’
ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘আমাদের পরিবারের দুই সদস্য সাগর-রুনি। ১০ বছর আগে তারা খুন হন। কিন্তু মামলার তদন্ত এখনো শেষ হলো না। কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটার পর রাষ্ট্রের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি; নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সাগর-রুনি হত্যার বিচার ১০ বছরেও হয়নি। এমনকি হত্যার ক্লু বের করতে পারেনি র্যাব। যিনি তদন্ত করছেন তার চাকরি কীভাবে থাকে? তাকে চাকরিচ্যুত করা উচিত।’
সাংবাদিকদের অন্যান্য সংগঠনের উদ্দেশে মিঠু বলেন, ‘শুধু ডিআরইউ কেন সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার থাকবে। অন্যা সংগঠন কেন নীরব থাকে। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এ ব্যাপারে কেন মিউ মিউ করে কথা বলে? আমরা আশা করব তারা ডিআরইউর সঙ্গে থাকবে, বিচারের দাবিতে ভূমিকা রাখবে।’
সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে সম্পাদক সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার আছি এবং সোচ্চার থাকব। আগামীকাল রোববার এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়ার কথা রয়েছে। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধান বিচারপতি বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে।’
সমাবেশে ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা শেখ মামুনুর রশীদ, ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিবসহ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজার এলাকার বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন নাহার রুনা ওরফে মেহেরুন রুনি দম্পতি। ঘটনার পরের দিন রুনির ভাই নওশের আলম রোমান রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ হয়ে ঘটনার দুই মাস পর মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব। দায়িত্ব পেয়ে তদন্ত শুরু করলেও ১০ বছরেও তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি পুলিশের বিশেষ এ ইউনিট। তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নিয়মিত আদালত থেকে সময় নিচ্ছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত শেষ না হওয়ায় এর বিচারকাজও এগোচ্ছে না।