Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 11:51 pm

রাইট শেয়ার নিয়ে অতি আশাবাদ অস্বাভাবিক বাড়ছে শেয়ারদর

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: রাইট শেয়ার ইস্যুর খবরে সম্প্রতি পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারদর ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। রাইট শেয়ার ইস্যু আর অনুমোদন এক নয়। বিষয়টি না বুঝেই এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী এসব কোম্পানির শেয়ার কিনতে প্রতিযোগিতায় নামছেন। ফলশ্রুতিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে শেয়ারদর। বাজার-সংশ্লিষ্টদের মতে, বেড়ে যাওয়া দরে শেয়ার কিনে লাভের বদলে লোকসানে পড়ে যাবেন বিনিয়োগকারীরা। তাদের অভিমত, রাইট শেয়ার ইস্যুর কারণে কোনো কোম্পানির শেয়ারদর কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হওয়া স্বাভাবিক। তবে এটা কোনোভাবেই অতিমূল্যায়িত হওয়া যাবে না।

সম্প্রতি রাইট শেয়ার ইস্যুর খবরে অস্বাভাবিক হারে দর বাড়তে দেখা গেছে ব্যাংকিং খাতের এবি ও আইএফআইসি ব্যাংকের। সম্প্রতি রাইট শেয়ার ছাড়ার অনুমতি পেয়েছে আইএফআইসি ব্যাংক। অন্যদিকে এবি ব্যাংকের রাইট শেয়ার ছাড়ার নিজেদের ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে। বিএসইসির অনুমোদন পাওয়ার পর বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

রাইট শেয়ার ইস্যুর বিষয়ে কিছু ভুল ধারণা রয়েছে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর। তারা ভাবেন, কোনো কোম্পানি রাইট শেয়ার ছাড়ার ঘোষণা দিলে সঙ্গে সঙ্গেই তা কার্যকর হবে। ফলে এসব কোম্পানিতে তাৎক্ষণিকভাবে বিনিয়োগ করতে দ্বিধা করেন না তারা। প্রকৃতপক্ষে  কোনো প্রতিষ্ঠানকে রাইট শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর বিএসইসির অনুমতির জন্য আবেদন করতে হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে বিএসইসি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় তারা প্রতিষ্ঠানটিকে রাইট শেয়ার ছাড়ার অনুমতি দেবে কি না। অর্থাৎ রাইটের আবেদন করলেই তা অনুমোদনের কোনো নিশ্চয়তা নেই। বরং বিএসইসির অনুমোদন পাওয়ার পর বলা যায় প্রতিষ্ঠানটি রাইট শেয়ার ছাড়বে। বিষয়টি সম্পর্কে অনেকের পরিষ্কার ধারণা না থাকায় কিছু কোম্পানি এ সুযোগ গ্রহণ করে শেয়ারদর বাড়িয়ে দেন। এ বিষয়ে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট রকিবুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, কোনো কোম্পানির রাইট শেয়ার ইস্যু করা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু বিএসইসির অনুমতি ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এটি কার্যকর করা সম্ভব নয়। তাই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত রাইটের অনুমোদন পাওয়ার পর। একই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, রাইট ইস্যুকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি যে কোম্পানি দুটির শেয়ারদর বেড়েছে, তা অস্বাভাবিক। আর্থিক বিবেচনায় দুটি প্রতিষ্ঠানই বর্তমানে তালিকাভুক্ত অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে পিছিয়ে রয়েছে। রাইটের খবরে শেয়ারদর দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার মতো আর্থিক অবস্থা কোম্পানি দুটির নেই।

এক মাস আগে রাইট শেয়ার ইস্যুর খবরের আগে আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ারদর ছিল ২৩ টাকা ৭০ পয়সা। এরপর ধারাবাহিকভাবে দর বাড়তে থাকে। বর্তমানে এই দর পৌঁছেছে ৩১ টাকা ৬০ পয়সায়।  অর্থাৎ ২৩ টাকার একটি শেয়ারের এক মাসের ব্যবধানে দর বেড়েছে প্রায় ৯ টাকা। গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরে রয়েছে শেয়ারটি। গত এক বছরের মধ্যে এ শেয়ার সর্বনি¤œ ১৪ টাকা ৮০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ৩২ টাকায় লেনদেন হয়।

অন্যদিকে এবি ব্যাংকের শেয়ারদর এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে প্রায়  পাঁচ টাকা। এক মাস আগে এ কোম্পানির প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়  ২২ টাকা ৭০ পয়সায়। গতকাল বিক্রি হয় ২৭ টাকা ২০ পয়সায়। এর আগে আইডিএলসি ও সাইফ পাওয়ার টেকের ক্ষেত্রেও এমন চিত্র দেখা যায়।