Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 1:25 pm

রাজকীয় বিবাহ বিচ্ছেদের মূল্য সোয়া ৬ হাজার কোটি টাকা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: দুবাইয়ের কোটিপতি শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম ও তার সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনত আল-হুসেইনের বিবাহ-বিচ্ছেদের এক আলোচিত মামলার রায় হয়েছে। এতে প্রিন্সেস হায়াকে সব মিলিয়ে ৬৬ কোটি ডলারেরও বেশি (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ হাজার ২১৫ কোটি টাকায়) পরিশোধ করতে হবে।

ব্রিটিশ আইনি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিবাহবিচ্ছেদের মামলা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে একে।

যুক্তরাজ্যের হাইকোর্ট জর্দানের প্রয়াত বাদশাহ হোসেনের ৪৭ বছর বয়সী কন্যা রাজকুমারী হায়া বিনতে আল-হোসেনকে থোক হিসেবে ৩৩ কোটি ডলারের বেশি বরাদ্দ করেছেন। রাজকুমারী হায়া দুবাইয়ের ধনকুবের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুমের ছয় স্ত্রীর মধ্যে সবার ছোট। শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী। ঘোড়দৌড়ের প্রভাবশালী মালিক হিসেবেও যুক্তরাজ্যে পরিচিতি আছে তার।

প্রিন্সেস হায়া ২০১৯ সালে তার দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে ব্রিটেনে পালিয়ে যান। তিনি বলেন, শেখ মোহাম্মদ এর আগে তার দুই মেয়ে শেখ লতিফা ও শেখ শামসাকে অপহরণ করিয়েছেন, ফলে তিনি এখন তার নিজের জীবন নিয়ে আশংকার মধ্যে আছেন।

প্রিন্সেস হায়া তার এক ব্রিটিশ দেহরক্ষী সাবেক সেনার সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বলে জানার পর শেখ মোহাম্মদ ‘তুমি বেঁচে ছিলে, তুমি মরে গেছো’  নামে একটি কবিতা প্রকাশ করেন যাতে তাকে হুমকি দেয়া হয় বলে অনুমান করা হয়। তিনি বলেন, ব্রিটেনে আসার পরও তিনি হুমকি পেয়েছেন।

আদালত রায় দিয়েছে যে দুবাইয়ের এই শাসকের ঘরে প্রিন্সেস হায়ার দুই সন্তানের প্রত্যেককে প্রতিবছর ৫৬ লক্ষ পাউণ্ড দিতে হবে, এবং তা ২৯ কোটি পাউণ্ডের একটি গ্যারান্টি দিয়ে সুরক্ষিত করা থাকবে। এই দুই সন্তানের মধ্যে এক কন্যার বয়স ১৪ বছর এবং পুত্রের বয়স নয় বছর।

প্রিন্সেস হায়ার ব্রিটেনে বহু লক্ষ পাউণ্ড দামের দুটি বাড়ি রয়েছে এবং এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের খরচের কথাও রায়ে রয়েছে। এ বাড়িগুলোর একটি লন্ডনের কেনসিংটন প্রাসাদের পাশেই, এবং অপরটি সারে কাউন্টির এগহ্যামে।

এ ছাড়া রায়ে প্রিন্সেসের নিরাপত্তার ব্যয়, ছুটি কাটানোর খরচ, একজন নার্স ও আয়ার বেতন ও আবাসনের খরচ, পরিবারের জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়ি, এবং তার পালিত ঘোড়া ও অন্যান্য প্রাণীর খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এ বছর হাইকোর্ট এক রুলিংএ বলেছে, শেখ মোহাম্মদ অবৈধভাবে প্রিন্সেস হায়া, তার দেহরক্ষী এবং আইনজীবী দলের ফোন হ্যাক করিয়েছিলেন। এ জন্য ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহার করা হয়।

তবে শেখ মোহাম্মদ বলেন, তার কাছে কোন হ্যাক করে পাওয়া সামগ্রী নেই, এবং তার অনুমোদন নিয়ে কোন নজরদারি চালানো হয়নি। প্রিন্সেসের কোন ক্ষতি করার ইচ্ছে নেই বলেও জানান তিনি।

দীর্ঘদিন ধরে চলা এই আইনি লড়াই সাধারণভাবে গোপনীয়তার আড়ালে থাকা মধ্যপ্রাচ্যের এক রাজপরিবারের ওপর ব্যাপক প্রচারের আলো ফেলে।