Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:25 am

রাজধানীর গণপরিবহনে নৈরাজ্য

বর্তমানে যানজটের কারণে ঢাকা শহরে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত শহর ঢাকা। এখন এর জনসংখ্যা প্রায় দুই কোটি ১০ লাখ। অর্থাৎ ৩০৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই শহরে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৪৩ হাজার ৫০০ লোক বাস করে। এমনিতেই যানজটের অসংখ্য কারণ বিদ্যমান। তার মধ্যে লোকাল বাসের দৌরাত্ম্য যানজটকে অসহনীয় পর্যায়ে নিয়ে গেছে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) তথ্যানুযায়ী, রাজধানী ঢাকা শহরে বর্তমানে কাগজে-কলমে বাস রুটের সংখ্যা ২৯১টি। এই সংখ্যক রুটে আড়াই হাজার কোম্পানির ৩০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। জানা গেছে, এসব রুটের মধ্যে কিছু বর্তমানে অকার্যকর। ৩০ হাজার গাড়ির মধ্যে অধিকাংশের ফিটনেস নেই, দেখা যায় হঠাৎ করে রাস্তায় মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে তৈরি হয় তীব্র যানজটের। এছাড়া  রাস্তার মধ্যে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানো, অনেক সময় লোকাল বাসের ড্রাইভাররা যাত্রী ওঠানোর জন্য কে কার আগে যেতে পারে, এটা নিয়ে প্রতিযোগিতা চলে, দেখা যায় অন্য গাড়িগুলো তাদের কমপিটিশনের মাঝে পরে যানজটের সৃষ্টি করে। চলাচলের সময় ড্রাইভাররা নির্দিষ্ট লেন ব্যবহার করে না, যখন খুশি যেকোনো লেনে গাড়ি চালায়। নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি যাত্রী গাড়িতে না ওঠাতে পারলে ড্রাইভার গাড়ি ছাড়ে না। দেখা যায়, রুটের মধ্যে গাড়ি রেখেই বিভিন্ন পয়েন্টের নাম ধরে হেলপার  ডাকতে থাকে; যেমন মতিঝিল, সায়দাবাদ, গোলাপবাগ, মুগদা, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর প্রভৃতি। যাত্রীদের প্রতি প্রত্যাশাÑতারা যেন রাস্তার মাঝে গিয়ে বাসে না ওঠে, নির্দিষ্ট  স্থান (বাস থামবে) থেকে বাসে উঠবে। আর বাস নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের প্রতি প্রত্যাশা তারা বাসের যাবতীয় বিষয় তদারকি করবে, চলাচলের অনুপযোগী বাস রাস্তায় নামাবে না এবং ড্রাইভার ও হেলপারের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যের অতিরিক্ত মূল্য দাবি করবে না, কারণ এটা মেটাতে গিয়ে ড্রাইভার ও হেলপারকে ঝুঁকি নিয়ে হয়। আর ফলাফল হিসেবে আমরা পাই তীব্র যানজট। এছাড়া ড্রাইভারের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কি না, সেটাও মনিটরিং জরুরি। তদুপরি বাসের ড্রাইভার, হেলপার ও যাত্রীদের আচরণ নম্র হওয়া দরকার। সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই যানজটের নিরসন সম্ভব।

শাহরিয়ার হাসান রাকিব

শিক্ষার্থী, মনোবিজ্ঞান বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়