নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী সংসদ নির্বাচনের ভার নিয়ে দায়িত্ব শুরু করা সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না হলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দুরূহ হয়ে পড়বে। দায়িত্ব নেয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় গতকাল রোববার শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপে একথা বলার পাশাপাশি রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য তাদের লেখালেখির পরামর্শ দেন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখন দূরত্ব ঘোচেনি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের পক্ষপাতী হলেও বিএনপি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভেদের মধ্যেই গত মাসের শেষে দায়িত্ব নেয় হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশন। দায়িত্ব নিয়েই হাবিবুল আউয়াল রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আমরা অনুনয়-বিনয় করব, আপনারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টি করেন।’
সংলাপে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে রাজনৈতিক সমঝোতা এবং ইসির আস্থা অর্জনের ওপর জোর দেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে সিইসি বলেন, ‘আমরাও আপনাদের সঙ্গে পুরোপুরি একমত, সমঝোতা লাগবে। ভালো ইলেকশন করাটা পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। স্টেকহোল্ডার যারা আছেন, তারাও যদি সমভাবে না আসে…পলিটিক্যাল ক্লাইমেট, নির্বাচনে রাজনৈতিক আবহ অনুকূল না হয়, দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি সমঝোতা না থাকে; পক্ষগুলো বিবদমান হয়ে যায়, তাহলে আমাদের পক্ষে ভালোভাবে নির্বাচন করাটা দুরূহ।’
‘রাজনৈতিক সমঝোতাটা গুরুত্বপূর্ণ। সমঝোতা হলে ইসির কাজ সহজ হবে,’ বলেন তিনি।
নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপির কোনো ইতিবাচক বক্তব্য না আসার প্রেক্ষাপটে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘কিছু কিছু রাজনৈতিক দলকে দেখছি, তারা কোনোভাবেই নির্বাচন কমিশনকে আস্থায় নিচ্ছে না।’
সব দল না এলে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতায় কিছুটা ‘ভাটা পড়ে যাবে’ মন্তব্য করে তিনি সবার আস্থা অর্জনে সচেষ্ট হওয়ার কথা বলেন। ‘আমরা চেষ্টা করব, আমাদের তরফ থেকে যতœ করার জন্য।’
শিক্ষাবিদদের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা সহযোগিতা করবেন। দলগুলোকে এ বিষয়ে সচেতন করতে পারেন। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার বিষয়ে লেখালেখি চালিয়ে যেতে পারেন।’
নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সিইসি বলেন, ভালো নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ‘সদিচ্ছার অভাব হবে না’।
নির্বাচন ভবনে গতকাল দুই ঘণ্টাব্যাপী এ সংলাপে অংশ নেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম মফিজুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম আবুল কাশেম মজুমদার, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, ড. আখতার হোসেন, অধ্যাপক লায়লুফার ইয়াসমীন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির প্রো-ভিসি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার।