নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের চলমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে বর্তমান সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে রাজপথে নামার বিকল্প নেই। গতকাল রাজধানীতে এক স্মরণসভায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়ানোর কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও দুর্গতি তুলে ধরে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, এদিকে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে হু হু করে, অন্যদিকে এখন আবার হঠাৎ এক লাফে পার লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে দিল ডিজেল-কেরোসিনের দাম। ফলে আরও দ্বিগুণ বাড়বে দ্রব্যমূল্য। এখন সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? তাদের তো এখন না খেয়ে অপুষ্টিতে মৃত্যুবরণ করার মতো অবস্থা হয়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে সবাইকে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সব সময় যেটা বলে আসছি, এখনও বলছিÑকোনো বিকল্প নেই। একমাত্র পথ হচ্ছে এদের (বর্তমান সরকার) সরিয়ে দিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা, পার্লামেন্ট তৈরি করা। আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই, আমরা সবাই রাজপথে নেমে আসি।
কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘তরিকুল ইসলাম স্মৃতি সংসদ’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তরিকুল। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের এই সংগঠক বিএনপি সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ছিলেন। এ স্মরণসভায় মিলনায়তনে হাজারো নেতাকর্মী জড়ো হোন। সভা শুরু হলেও নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকেন নেতাকর্মীরা। এতে নেতারা বক্তৃতা করতে এসে বিরক্তি প্রকাশ করেন।
এমনকি বিএনপি মহাসচিব বক্তৃতা শুরু করলেও তা থামেনি। হট্টগোলে বিরক্ত হয়ে একপর্যায়ে তিনি ডায়াস থেকে নেমে যান। পরে সবাই চুপ করলে তিনি ফিরে এসে বক্তব্য শেষ করেন।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, গত ৭ মাসে ৮৪ জন নিহত হয়েছেন এবং সব তাদের লোক। তারা নিজেরা নিজেরা এখন মারামারি করে। কারণ বিরোধী দল তো নেই।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে তারা লুট করে, নিজেরা মারামারি করে ও নিজেদের মধ্যেই এ সমস্যা তারা তৈরি করছে। আর মামলা দেয় বিএনপির নামে। তরিকুল ইসলামের বর্ণাঢ্য জীবন তুলে ধরে তার আদর্শ অনুসরণ করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলাল, শামীমুর রহমান শামীম ও আমিরুজ্জামান শিমুল। বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জয়ন্ত কুমার কুণ্ড, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছোট ছেলে বিএনপির সহ-সাংগঠিনক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোর-খুলনার নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।