রাজশাহীতে আলুর ভালো দামে খুশি চাষিরা

মেহেদী হাসান, রাজশাহী: বাজারে আগাম জাতের লাল পাখরি (ইন্দুরকানি) আলু বিক্রি হচ্ছে হরদম। রাজশাহীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে মাঝারি ও বড় আলু ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আগাম আলু বেশ ভালো দামের কারণে খুশি জেলার আলুচাষিরা।

ব্যবসায়ী ও চাষি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বাজারে যে নতুন আলু দেখা যাচ্ছে তার বয়স সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মতো। ৫০ দিনের পর থেকে আলুর আকার মাঝারি হতে শুরু হয়। ফলে কোনো কোনো চাষি আগাম আলু উত্তোলন করে বাজারজাত করেন। এতে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দামের ক্ষেত্রে পুষিয়ে যায়। ফলন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অর্ধেক হলেও তাদের আপত্তি থাকে না।

জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহীতে কার্ডিনাল, ডায়মন্ড ও অ্যাস্টেরিক জাতের আলু বেশি চাষ হয়। অনেক চাষি আগাম জাতের আলু চাষ করেন। এসব আগাম আলুর দাম বেশি পাওয়ায় অনেক চাষি আগ্রহ নিয়ে আলু চাষ করেন।

চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে, যা গত বছর ছিল ৩৮ হাজার ৬২৯ হেক্টর জমিতে। চলতি ২০২২-২৩ মৌসুমে আগের তুলনায় কমেছে আলুর চাষ। ৩৬ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে ৯ লাখ ৭৬ হাজার ১২৭ মেট্রিক টন আলু চাষের পরিকল্পনায় এগোচ্ছে কৃষি বিভাগ। অর্থাৎ প্রতি হেক্টর জমিতে ২৬ দশমিক ৫০ টন আলু চাষ করার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

চাষিরা বলছেন, কয়েক বছর ধরে তারা আলুর ন্যায্য দাম পান না। তবে গত দুই বছর থেকে দাম ভালো পাওয়ায় আলু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন তারা।

তানোর যোগীশহ এলাকার আলুচাষি রেজাউল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর ২০ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করি। বর্তমানে আলুর দাম ভালো দাম রয়েছে। বাজারে যে দামে বিক্রি হচ্ছে, সে দামে তো আর জমিতে বিক্রি হবে না। আগাম আলু এক হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করতে পারলেও লাভ হবে, লোকসান হবে না।’

একই উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের আলুচাষি ও ব্যবসায়ী আব্দুর রাকিব বলেন, ‘গত বছর ৫০ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছিলাম। কিন্তু এবছর আলুর বীজ সংকট এবং দাম বেশি হওয়ায় ৩০ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছি। দু-এক দিনের মধ্যে আলু তোলা শুরু করব।’

রাজশাহীর সাহেব বাজারের সবজি বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘লাল আলু বিক্রি করছি ৫০ টাকা কেজি। দিন ১৫ আগে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। আর কিছুদিন পর আরও দাম কমবে। সাদা বার্মা জাতের আলুর দাম একটু কম, ৪০ টাকা কেজি।’

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, ‘আলুর ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর আলু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কৃষক। কৃষকদের জমি প্রস্তুত। আমরা সরেজমিনে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বলেছি। বীজ কিংবা সারের কোনো সংকট নেই। আর নির্ধারিত সময়ে আলু চাষের জন্য উঠান বৈঠক ও বিভিন্ন সমাবেশের মাধ্যমে তাদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া কৃষকরা যাতে আলুর ভালো ফলন পান, সেজন্য সার, সেচ ও পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেয়া হচ্ছে।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০