Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 2:36 pm

রাজশাহীতে কমেছে পাট চাষ

প্রতিনিধি, রাজশাহী: রাজশাহী অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পাট চাষে প্রভাব পড়েছে। বৃষ্টিপাত ও ডোবা-খালে পর্যাপ্ত পানি না থাকা এবং পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় বাড়ছে উৎপাদন খরচ। এ কারণে পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন অনেক কৃষক। কৃষি অফিস বলছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রায় দুই হাজার হেক্টর কম জমিতে পাট চাষ হয়েছে। রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এই সময় বৃষ্টিপাত কম হয়েছিল। ফলে পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে চাষিদের। এ বছরও পাটের বীজ বপনের সময় বৃষ্টিপাত হয়নি। গত বছর জেলায় ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছিল, যা এবছর কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে।

সরেজমিনে এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির অভাবে উপজেলায় বেশিরভাগ খাল-বিল, ডোবা ও জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি নেই। জেলার বিভিন্ন উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোয়ও পর্যাপ্ত পানি না থাকায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। নদীসংলগ্ন এলাকার কৃষকেরা যে সামান্য পানি পাচ্ছে, তা দিয়ে কোনোভাবে পাট জাগ দিতে পারলেও দূরের কৃষকরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পবা উপজেলার পারিলা গ্রামের চাষি ইমরান আলী জানান, গত বছর ছয় বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন, তবে এ বছর চাষ করেছেন চার বিঘা জমিতে। তিনি উল্লেখ করেন, ডোবা বা খালে পানি না থাকায় পাট জাগ দেয়ার সমস্যায় পড়েছেন। এ কারণে পুকুরে পানি দিয়ে পাটের জাগ দিতে হচ্ছে, যা অতিরিক্ত খরচের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


চাষি আব্দুর রহিম জানান, পাট চাষের পর পর্যাপ্ত পানি না থাকলে জাগ দেয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। পুকুর ভাড়া নিয়ে বা সেচ দিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে, যা উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের পাটচাষি নুর ইসলাম জানান, তার জমি ইউনিয়নের মাহেন্দ্র বিলে। কিন্তু পাট কেটে তাকে জাগ দেয়ার জন্য নিয়ে যেতে হচ্ছে আট কিলোমিটার দূরে তেবাড়িয়া বিলে। এতে অনেক খরচ হচ্ছে। পাট বেচে খরচ উঠবে না বলে জানান তিনি। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) উম্মে সালমা জানান, এখনও ভরপুর পাট কাটা শুরু হয়নি। জেলায় পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতে পাট জাগ দেয়ার সমস্যা কিছুটা লাঘব হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর জুলাই মাসে বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ায় চাষিরা কিছুটা সুবিধা পেয়েছেন।

তিনি বলেন, চাষিরা রিবন পদ্ধতিতে পাটের আঁশ ছড়িয়ে কম পানিতে অল্প জায়গাতে বেশি জাগ দিতে পারবেন। পাশাপাশি রিবন পদ্ধতিতে পাট জাগ দিয়ে আঁশ ভালো পাওয়া যায় এবং দামেও বৃদ্ধি পায়। সব মিলিয়ে এবারও পাটের উৎপাদন ভালো হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।