রাজশাহীতে কমেছে মৃত্যুহার গণটিকায় স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ

প্রতিনিধি, রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের কভিড ইউনিটে কমে এসেছে মৃতের সংখ্যা। শুক্রবার (৬ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে শনিবার (৭ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময় মারা যান ১২ জন। তবে এর আগেরদিন মারা যান ১৫ জন এবং তার আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ১৭ জনের।

অপরদিকে গতকাল শনিবার রাজশাহী নগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পর্যায়ে শুরু হয়েছে কভিড-১৯ গণ-টিকাদান কার্যক্রম। এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন নিবন্ধিত ব্যক্তিরা।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম শেয়ার বিজকে জানান, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে ৮৪টি কেন্দ্রে একযোগে আজ (৭ আগস্ট) সকাল থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অনেকে গণটিকায় স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নিয়েছে। আবার অনেকে অফিসের চাপে টিকা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০০ জনের মাঝে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যাপ্ত টিকা মজুত রয়েছে। আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন এ টিকা কার্যক্রম চলমান থাকবে।

এ ব্যাপারে রাজশাহীর সিভিল সার্জন কাইয়ুম তালুকদার বলেন, টিকাদানে বয়স্ক, শারীরিকভাবে বা অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের সে সঙ্গে নারীদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। প্রথম দিন প্রতিটি টিকা কেন্দ্রে মানুষের যথেষ্ট উপস্থিতি দেখা গেছে। রাজশাহী জেলার ৭৩টি ইউনিয়নেই গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে তিনটি করে বুথে টিকা দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি বুথে ৬০০ জন করে টিকা পাবেন।

নগরীর কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা গেছে, টিকা গ্রহণে বেশ আগ্রহী সাধারণ মানুষ। প্রতিটি কেন্দ্রে নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয় সকালে। দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা সুশৃঙ্খলভাবে পর্যায়ক্রমে টিকাদানের কক্ষে ঢুকান। তবে বাইরে লাইনে ছিল বেশ ভিড়। কোনো দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা যায়নি। গ্রহীতার টিকা নিয়ে চলে যান নিজ বাসায়।

সবাই টিকা নিয়ে ফিরেছেন নগরীর দড়িখরবোনা এলাকার নার্গিস বেগম (৩২)। তিনি শেয়ার বিজকে জানান, কভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতেই টিকা নিয়েছেন। তবে তার মাথা হালকা ঝিমঝিম ও ঘুম পাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, স্বাভাবিক অবস্থায় টিকার জন্য এসে বসছেন এবং টিকা গ্রহণ করে নিজে থেকেই তারা চলে যাচ্ছেন। টিকা গ্রহীতাদের কোনো সমস্যা হয়নি। নারীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকা নিয়েছেন।

এদিকে হাসপাতাল সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১২ জনের মধ্যে কভিড পজিটিভ ছিলেন মাত্র চারজন এবং পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গে। এছাড়া তিনজনের প্রাণ গেছে কভিড নেগেটিভ থেকেও। মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর তিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা ও কুষ্টিয়ায় দুজন করে ছয়জন। এছাড়া নওগাঁ, নাটোর ও সিরাজগঞ্জের ছিলেন একজন করে তিনজন। তাদের মধ্যে আটজন পুরুষ এবং চারজন মহিলা।

সর্বশেষ পাওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় কভিড ও এর উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছেন ৪৩ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৯ জন। রামেকের কভিড ইউনিটে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ৪০৭। তাদের মধ্যে ২০৩ জন কভিড পজিটিভ রোগী। হাসপাতালটির কভিড ইউনিটে বর্তমানে ৫১৩টি বেডে প্রস্তুত রাখা হয়েছে কভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য। তবে মৃতের সংখ্যা কমে আশায় স্বস্তি প্রকাশ করছেন কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার শামীম ইয়াজদানী শেয়ার বিজকে বলেন, চিকিৎসক ও নার্সদের আপ্রাণ চেষ্টায় কভিড রোগীদের সুস্থ করা সম্ভব হচ্ছে। কমে আসছে মৃতের সংখ্যা। শিগগির অবস্থার উন্নতি হবে এবং শূন্যে নেমে আসবে কভিড ইউনিটে মৃতের সংখ্যা। আপাতত রাজশাহী বিভাগের নাটোর ও পাবনায় বেশি রোগী মারা যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জকে মডেল হিসেবে নিয়ে জনসচেতনতায় জোর দেয়া উচিত।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০