Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 7:24 pm

রাজস্ব আহরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কারণে রাজস্ব আদায়ে চ্যালেঞ্জ আসতে পারে। আমরা এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সাহস রাখি এবং আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যাচ্ছি। এনবিআর এ প্রতিকূলতা মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে। গতকাল এনবিআর সম্মেলন কক্ষে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।

চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতির যদি গতি মন্দা দেখা দেয়, তার সঙ্গে অবশ্যই অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণের সম্পর্ক থাকবে এবং আছে। এখনও আন্তর্জাতিক রাজনীতির কারণে অর্থনীতে যেসব সমস্যা চলছে, তার জন্য জাতীয় বা অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। আমরা এ সমস্যাকে সমস্যা হিসেবে দেখতে চাই না। চ্যালেঞ্জ আছে এবং থাকবে। আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সাহস রাখি এবং আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যাচ্ছি। করোনার দুই বছর আমরা এই ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি। সামনের দিকে বিশ্ব ও অভ্যন্তরীণ কারণে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ আসতে পারে, সেটা মোকাবিলা করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।  

সম্প্রতি রাজত্ব ব্যবস্থা সংস্কার তথা কর অব্যাহতি কমিয়ে আনা নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেয়া বিভিন্ন সুপারিশের বিষয়ে এনবিআরের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, এটি যৌক্তিকীকরণ করা হচ্ছে এবং তা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। রাতারাতি সব উইথড্র (প্রত্যাহার) করা যাবে না।”এছাড়া তিনি

বিদ্যমান সহায়তাকে করছাড় বলতেও নারাজ। তিনি বলেন, এটি শিল্প বাণিজ্যে কর সহায়তা বা পলিসি সাপোর্ট। চেয়ারম্যান বলেন, এনবিআর যেসব ক্ষেত্রে করছাড় বা পলিসি সাপোর্ট দিয়ে আসছে, সক্ষমতা

বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে আস্তে আস্তে ছাড় তুলে নেয়া হচ্ছে। ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের যেসব জায়গায় প্রথম থেকে আমরা

সাপোর্ট দিয়েছি, তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে কিছু সাপোর্ট আমরা তুলে নিয়ে আসছি। পলিসি সাপোর্ট যৌক্তিকীকরণের পর্যায় করা হবে।

চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব আদায় গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। ভ্যাটের প্রবৃদ্ধি ১৭ শতাংশ, ভ্যাটের পর পরেই আয়কর ও কাস্টমসের প্রবৃদ্ধি ১৪-১৫ শতাংশ। যত ঝড় ঝাণ্ডা আসুক না কেন, আমরা এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার চেষ্টা করব। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে,

বিনিয়োগকে অব্যাহত রাখতে হলে, সরকারকে সহায়তায় অব্যাহত রাখতে হলে এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হবে। আমরা যে মধ্যম আয়ের দেশের দিকে ধাবিত হচ্ছি, অন্তত সেটাকে আমরা কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হতে দিতে চাই না। সেটা বাধাগ্রস্ত হওয়ার জন্য অন্তত যেন রাজস্ব বিভাগের ঘাড়ে দোষ না আসে, আমরা সঠিক পরিমাণ রাজস্বের জোগান দিতে পারিনি। সে জন্য আমাদের যথেষ্ট আন্তরিকতা ও চেষ্টা অব্যাহত আছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এনবিআরের আহরিত রাজস্বের ৩৭ শতাংশের বেশি আসে ভ্যাট খাত থেকে। ভ্যাট খাতে আদায় বাড়াতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ১০-১৫ ডিসেম্বর ভ্যাট সপ্তাহ পালন করা হয়। এবার ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছেÑউন্নয়নের ভ্যাট নীতি, ভ্যাট দিয়ে গড়ব জাতি। ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহে সেবা প্রদানের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভ্যাট অফিসের দূরত্ব কমিয়ে আনা হবে।