নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) এক সহকারী পরিচালকের প্রায় ৪৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ এবং এক সহকারী স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুদক। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আরিফ সাদেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজীর দায়ের করা মামলা (নম্বর ৭) সূত্রে জানা গেছে, জয়নাল আবেদীন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট, গাজীপুর বিভাগের সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা। তিনি বর্তমানে রাজধানীর রামপুরায় বাস করেন। তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর। দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি মোট ১ কোটি ৫৬ লাখ ৩৫ হাজার ৪০০ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেন। অনুসন্ধানকালে তিনি ১৭ লাখ ৭৫ হাজার ১৩ টাকার সম্পদের আয়ের উৎসের স্বপক্ষে কোনো রেকর্ডপত্র বা দালিলিক সাক্ষ্য প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি। তিনি ওই সম্পদ অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে অর্জন করে ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট তাকে সম্পদ বিবরণী নোটিস দেয়া হয়। জয়নাল আবেদীন গত ২২ অক্টোবর সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। তিনি ২০২০ সালে চাকরি থেকে অবসরে যান। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় (সজেকা) ঢাকা-১-এ গতকাল সোমবার মামলাটি দায়ের করা হয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধরের দায়ের করা মামলায় (নম্বর ১৮) অভিযোগ করা হয়, আবদুল জলিল মিয়া (৫৮) বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হিসেবে পটুয়াখালীতে কর্মরত। তার গ্রামের বাড়ি পাবনার ফরিদপুর উপজেলায়। তিনি রাজধানীর কাফরুলে বসবাস করেন। তিনি অসদুপায়ে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৪ লাখ ৮৯ হাজার ৩৩৬ টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। সেসব ভোগদখলে রেখেছেন। তার ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক ও সন্দেহজক লেনদেনের তথ্যও পাওয়া গেছে। তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধরের দায়ের করা আরেকটি মামলায় (নম্বর ১৭) অভিযোগ করা হয়, রাবেয়া খাতুন রুবি (৪৬) সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার)। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার চয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত। তিনি প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে জাল সনদ তৈরি করে সেগুলো খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে ওই বিদ্যালয়ে চাকরি নেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা বাবদ মোট ১৪ লাখ ৯ হাজার ৬৫০ টাকা উত্তোলন করেন। তিনি দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় (সজেকা) পাবনায় রোববার মামলা দুটি দায়ের করা হয়।